ঢাকা বিভাগের গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মাদারীপুর ও মানিকগঞ্জসহ কয়েকটি জেলায় করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলেও জেলার সাভার ও ধামরাই উপজেলায় এখনো করোনা শনাক্ত হয়নি। অর্থাৎ শিল্প অঞ্চল সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই বর্তমানে করোনামুক্ত।
এ উপজেলাটির চারপাশের জেলা-উপজেলায় যে হারে করোনা ভাইরাসের রোগী শনাক্ত হচ্ছে এতে করে আতঙ্কে রয়েছে সাভারবাসী।
চারপাশে যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে করোনা, যেকোনো সময় আশপাশের লোকজন সাভারে ঢুকে অবস্থান করতে পারে। তাই এই উপজেলার মানুষের দাবি, খুব শিগগিরই সাভার ও ধামরাই উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হোক।
সাভার ও ধামরাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য মতে, সোমবার (১২ এপ্রিল) পর্যন্ত সাভার উপজেলা থেকে ৩০ জনের নমুনা পাঠানো হলেও সবার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এবং ধামরাই উপজেলা থেকে করোনা সন্দেহে ২৫ জনের নমুনা পরীক্ষা জন্য পাঠানো হয়েছিলো সেখানেও সবার রির্পোট কোভিড-১৯ নেগেটিভ এসেছে।
ইতোমধ্যে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়ক পুরোপুরিভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে৷ সেইসঙ্গে করোনা সন্দেহে সাভার ও আশুলিয়ায় কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করাসহ কয়েকজনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
সাভার শিল্প অঞ্চল হওয়ায় এখানে প্রায় ৪০ লাখ পোশাক শ্রমিকের বসবাস। শ্রমিকরা জানান, তাদের পোশাক কারখানা যেহেতু বন্ধ হয়ে গেছে। সেহেতু শ্রমিকদের বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক।
সাভারের চারাবাগের বাড়িওয়ালা মজিদ ঢালি বাংলানিউজকে বলেন, আমার বাড়িতে প্রায় ৩০ জন ভাড়াটিয়া রয়েছে৷ তাদের সবাইকে আমি বলেছি যেনো অপ্রয়োজনে কেউ বাড়ি থেকে বের না হয়। বর্তমানে এ পরিস্থিতিতে কাউকে গ্রামের বাড়িতে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আর যারা গেছেন তাদের বাড়িতেই থাকতে বলা হয়েছে৷
স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী কালেরকন্ঠের নিজস্ব সংবাদাতা তাইফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সাভারে অনেক প্রবাসী রয়েছেন। যারা আমাদের উপজেলায় অবাধে প্রবেশ করছেন। তাছাড়া রাজধানী ঢাকা থেকে আমাদের উপজেলা বেশি দূরে নয়। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জ থেকে এক ব্যক্তি আশুলিয়ায় এসে অবস্থান নিয়েছেন। লকডাউন করার আগে লোকজন যদি আমাদের উপজেলায় এসে থাকে তাহলে সেটা আমাদের জন্য দুশ্চিন্তার। তাই সাভার ও ধামরাই উপজেলা অবিলম্বে লকডাউন করা উচিত।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শ্রমিক নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন বাংলানিউজকে বলেন, সাভার শিল্প অঞ্চল। তাই এখানে আতঙ্কের কারণ বেশি। এর কারণে অতিদ্রুত লকডাউন দরকার। জনসমাগম করে যারা ত্রাণ দিচ্ছে সেটাও বন্ধ করা দরকার। এদেশের মানুষ না খেয়ে মরবে না। অতএব এখনি সাভার লকডাউন করা প্রয়োজন।
সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ সায়েমুল হুদা বাংলানিউজকে বলেন, লকডাউনের ব্যাপাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। যেহেতু আশপাশের জেলা-উপজেলাগুলোতে করোনা শনাক্ত হয়েছে৷ বিষয়টি নিয়ে আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ডিসি সাহেবের সঙ্গে কথা বলেছি৷ লোকালভাবে সাভারের অনেক জায়গায় লকডাউন করা হয়েছে৷ আমরা এখন পর্যন্ত যে নমুনা পাঠিয়েছি সব নেগেটিভ এসেছে। তাই আমি সাভারবাসীকে বলবো আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হন।
লকডাউনের বিষয়ে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি পারভেজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আপাতত সাভার সীমান্তের কিছু এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সাভারের এখনো কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, সব সময় সচেতন থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১০৩৮ ঘণ্টা, ১৩ এপ্রিল, ২০২০
আরএ