ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দিনভর সরব, সন্ধ্যায় নীরব হবিগঞ্জ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২০
দিনভর সরব, সন্ধ্যায় নীরব হবিগঞ্জ

হবিগঞ্জ: দিনভর কর্মব্যস্ততা শেষে সন্ধ্যায় বাজারে বের হওয়া, ক্রেতা-বিক্রেতার পদচারণায় মুখরিত অলি-গলি, বিদ্যুতের আলোয় ঝলমলে শহর রাত ১১টা পর্যন্ত। এটাই ছিল হবিগঞ্জবাসীর কাছে চিরচেনা দৃশ্য। তবে করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় সন্ধ্যা ৬টার পর ঘর থেকে বাইরে বের হতে সরকারি নিষেধাজ্ঞার পর বদলে গেছে হবিগঞ্জ শহরের দৃশ্যপট।

শুক্রবার (১০ এপ্রিল) সন্ধ্যা নামতেই দেখা যায় এক অন্য হবিগঞ্জ। ফাঁকা রাস্তা, সুনসান নিরবতা।

যেন প্রকৃতির সঙ্গে গোপনে কথা বলছে ল্যাম্পপোস্ট। মাঝে মধ্যে টহল দিচ্ছে পুলিশের গাড়ি বহর। সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটও। দু’য়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও পুলিশের নির্দেশে তা বন্ধ করতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা।

অন্যদিকে, সরেজমিনে হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার, শায়েস্তানগর, পুরান বাজার, ঘাটিয়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা যায়, করোনা আতঙ্ক উপেক্ষা করে দিনভর হাট-বাজারে যাতায়াত করছেন মানুষজন। র‌্যাব, পুলিশ ও জেলা প্রশাসন একদিকে মাইকিং করে চলে গেলেই অন্যদিকে দোকান খোলে জিনিসপত্র বিক্রয় করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতারাও ক্রয় করছেন সাধারণ নিয়মেই। এ যেন কে শোনে কার কথা অবস্থা। অধিকাংশ লোকের মুখেই নেই মাস্ক। মানছেন না করোনা সম্পর্কিত নির্দেশনাও।

চৌধুরী বাজারে আসা সামছুল আলম নামে একজন বাংলানিউজকে বলেন, বাসায় রান্না করার মতো কিছু নেই। তাই বাজারে এসেছি। খেতে তো হবে। একই বাজারে আসেন লিজা আক্তার। তার ছিল না মাস্ক। ঝুঁকি নিয়ে কেন বেরিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে যাবো।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সচেতন মহলের কয়েকজন বাংলানিউজকে বলেন, সন্ধ্যার পর পুলিশি টহল জোরদার করায় ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন। অথচ দিনভর চলে নির্দেশনা অমান্য করে বেচাকেনা। এতে হবিগঞ্জবাসী করোনার ঝুঁকিতে পড়ছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, জনসচেতনতায় মাইকিংসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। অব্যাহত রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালতও। এরপরও ব্যবসায়ীরা কেন নির্দেশনা মানছেন না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আরও কঠোর হবে প্রশাসন।

এদিকে ছয়দিন আগে পাঠানো হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পানছড়ি আশ্রায়ন প্রকল্পের শ্বাসকষ্ট হয়ে মারা যাওয়া ৭০ বছরের এক বৃদ্ধের রিপোর্ট এখনও আসেনি। ওই রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সেখানকার ২৪২টি পরিবারকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। হবিগঞ্জ থেকে পাঠানো ১৭৫ জনের মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে ও শুক্রবার সকালে এসেছে ৮৭ জনের রিপোর্ট। যার সবগুলো নেগেটিভ।

হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল বাংলানিউজকে জানান, রিপোর্টের জন্য বার বার যোগাযোগ করেছি। আশা করছি দ্রুত রিপোর্ট পেয়ে যাব। এখন পর্যন্ত আসা সবগুলো রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। হবিগঞ্জে এক হাজার ১৮ জনের হোম কোয়ারেন্টিনে শেষ হয়েছে। অবশিষ্ট রয়েছে ৯৪ জন।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।