ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

প্রতিনিয়তই লকডাউন হচ্ছে রাজধানীর নতুন এলাকা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২০
প্রতিনিয়তই লকডাউন হচ্ছে রাজধানীর নতুন এলাকা

ঢাকা: দেশজুড়ে ক্রমেই প্রকোপ বাড়ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের। প্রথম রোগী শনাক্তের মাস পেরুতেই ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে সর্বোচ্চ ১১২ জন করোনা রোগী শনাক্তের খবর পাওয়া গেল। সারাদেশে শনাক্ত হওয়া এ পর্যন্ত ৩৩০ জন করোনা রোগী মধ্যে খোদ রাজধানীর ১৮৫ জন।

সারাদেশের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া রাজধানীতে জরুরি সেবা ব্যতীত প্রবেশ ও বাহির হওয়া নিষেধ রয়েছে। অভ্যন্তরে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণসহ নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপের কারণে ঢাকা কার্যত অবরুদ্ধ হলেও লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

তবে ক্রমেই রোগী বাড়তে থাকা রাজধানী ক্রমান্বয়ে বিভিন্ন এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হচ্ছে। প্রতিনিয়তই নতুন নতুন এলাকা যুক্ত হচ্ছে এ তালিকায়।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাজধানীজুড়ে বিচ্ছিন্নভাবে অন্তত ৬০টি এলাকায় আংশিক কিংবা পরিপূর্ণভাবে লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় থানা পুলিশ। এ ক্ষেত্রে কখনো বিভিন্ন গলিপথের সকল বাড়ি কিংবা সুনির্দিষ্ট কিছু বাড়িতে লকডাউন ঘোষণা করে জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত বাড়িগুলোতে পুলিশ প্রহরায় কারো প্রবেশ এবং বাহিরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। লকডাউনের আগে কেউ বাসার বাইরে থাকলে তিনি বাসায় যেতে পারবেন, তবে কোন অবস্থাতেই বিনা অনুমতিতে বাসা থেকে কেউ বের হতে পারবেন না।

বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্রিল) নতুন করে রাজধানীর অন্তত তিনটি এলাকায় লকডাউনের খবর পাওয়া গেছে। মোহাম্মদপুরের জাফরাবাদ এলাকায় মসজিদ স্টাফ করোনা আক্রান্তের ঘটনায় ওই মসজিদসহ একটি গলি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া, মগবাজার ও বংশাল এলাকায় সুনির্দিষ্ট গলি লকডাউনের কথা জানা গেছে।

মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ জানায়, বুদ্ধিজীবি কবরস্থান রোডের জাফরাবাদে ‘বুদ্ধিজীবী মসজিদের’ স্টাফ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ওই খবর পাওয়ার পর ওই মসজিদে প্রবেশ সংরক্ষিত ও মসজিদ সংলগ্ন গলি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া, মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করছে পুলিশ।

ডিএমপির মোহাম্মদপুর জোনের সহকারি কমিশনার (এসি) মো. রওশানুল হক সৈকত জানান, নতুন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলে আইইডিসিআর এর নির্দেশনা অনুযায়ী সেই এলাকায় লকডাউন করা হয়। জাফরাবাদে মসজিদের একজন স্টাফ করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর মসজিদ সংলগ্ন সড়ক লকডাউন করা হয়েছে। ওই এলাকার মানুষকে অপ্রয়োজনে বাইরে না আসতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এর মধ্যে প্রথমবারের মতো একটি বস্তি লকডাউনের খবর পাওয়া যায় বুধবার (০৮ এপ্রিল)। রাজধানীর শেরেবাংলা নগর এলাকায় মোতাহার বস্তিতে একজন করোনা আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাওয়ায় পুরো বস্তিটি লকডাউন করেছে পুলিশ।

শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানে আলম মুন্সী জানান, বস্তিতে একজন রোগী করোনা ভাইরাস পজিটিভ হওয়াতে আইইডিসিআর-এর নির্দেশে বস্তিটি লকডাউন করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণের শুরুতে মিরপুর টোলারবাগে রোগী পাওয়ার পর ওই এলাকা প্রথমে লকডাউন করা হয়। এরপর একে একে পুরান ঢাকা, মোহাম্মদপুর, আদাবর, বছিলাসহ বিভিন্ন এলাকায় সুনির্দিষ্ট কিছু সড়ক কিংবা এলাকা লকডাউন করা হয়।

এছাড়া, রাজধানীতে আংশিক লকডাউন করা উল্লেখযোগ্য এলাকাগুলো হচ্ছে- মিরপুরের টোলারবাগ, মিরপুর-১০, মিরপুর সেকশন- ১১, মিরপুর-১৩, কাজীপাড়া, সেনপাড়া, বুয়েট এলাকা, ইস্কাটনের দিলু রোড, উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের একটি সড়ক এলাকা।

সেন্ট্রাল রোড, সোয়ারীঘাট, পল্টন, আশকোনা, নয়াটোলা, লালবাগের খাজে দেওয়ান রোড, ধানমন্ডি-৬ এলাকা ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে রাজধানীজুড়ে বিভিন্ন গলিপথ লকডাউন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০২৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১০, ২০২০
পিএম/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।