ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এলাকাবাসী ‘লকডাউন’ করেছে বাসাবো

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৭, ২০২০
এলাকাবাসী ‘লকডাউন’ করেছে বাসাবো

ঢাকা: খবরটি আসে গত ৫ এপ্রিল। রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি করোনা রোগী বাসাবো এলাকায়। আক্রান্ত হন একই পরিবারের ছয়জন। এরপর থেকেই পুরো এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। কিন্তু সেই আতঙ্ককে পাশ কাটিয়েই ‘অযথা’ অনেকেই বেরিয়ে পড়ছিলেন ঘর থেকে। সে সব ঠেকাতে সোমবার (৬ এপ্রিল) থেকে অঘোষিত লকডাউন করা হয়েছে বাসাবো এলাকাকে।

মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) সরেজমিনে বাসাবো এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রশাসনের অপেক্ষা না করেই এলাকাবাসী নিজ উদ্যোগে বিভিন্ন সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে। বাঁশ আর দড়ি দিয়ে তারা রাস্তা আটকে রেখেছেন।

আর তাদের এ কাজে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।

মঙ্গলবার উত্তর বাসাবো এলাকার সাত নম্বর সড়কে গেলে দেখা যায়, এলাকাবাসীর উদ্যোগেই এলাকাটি লকডাউন করা হয়েছে। এলাকাবাসী বাঁশ আর দাড়ি দিয়ে সড়কে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। অপরিচিত কাউকে ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। একই সঙ্গে যারা বের হতে চাচ্ছেন তাদেরও সম্মুখীন হতে হচ্ছে জিজ্ঞসাবাদের। আর যান চলাচল তো সম্পূর্ণরূপেই বন্ধ।

মঙ্গলবার সকালের দিকে উত্তর বাসাবোর কালভার্ট এলাকায় কিছু স্থানীয় ছেলেদের অযাচিত আড্ডা নজরে আসে। তবে এর কিছুক্ষণ পরেই পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে দেয়। এবং কাজ ছাড়া বের না হওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয় তাদের।

একই দৃশ্য নজরে আসে বাসাবোর আগমন সিনেমা হলের সামনে। এলাকার কিছু ছেলে অযাচিত আড্ডা দিলে তাদের ধাওয়া দিয়ে সরিয়ে দেয় পুলিশ।

লকডাউনে ফাঁকা বাসাবোএদিকে, মঙ্গলবার থেকে ভোর ছয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত মুদি দোকান খোলা থাকার সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। যার কারণে সকাল আটটা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত মুদি দোকানগুলোতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। একইসঙ্গে সামাজিক দূরত্বও এখানে সঠিকভাবে পালন করা হয়নি।

এ বিষয়ে উত্তর বাসাবো এলাকার মুদি দোকানদার সেলিম বলেন, আগে তো সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা থাকতো। এখন দুইটায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আগে ঘণ্টায় দশজন কাস্টমার আসলে, এখন সেখানে ত্রিশজন হচ্ছে। ফলে সামাজিক দূরত্ব মানানোটাও কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যদিও আমার দোকানের সামনে বৃত্ত এঁকে রেখেছি।

বাসাবো এলাকার বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, বাসাবো এলাকায় করোনো রোগী বেশি পাওয়া যাওয়ার খবরটি আসার পর থেকেই এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে আমরা নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে এলাকা লকডাউন করেছি। সে সঙ্গে মানুষকে ঘরে থাকার জন্য বারবার অনুরোধ করছি।

স্থানীয় বাসিন্দা মুহম্মদ আকবর বলেন, সোমবার থেকে বাসাবো এলাকায় কড়াকড়ি বাড়ানো হয়েছে। ফলে যে গলিতে বাচ্চারা খেলাধুলা করতো, সেখানেও এখন কেউ নেই। সন্ধ্যার পর পুরো রাস্তায় থমথমে হয়ে পড়ে। এ সময় কাউকেই আর সড়কে দেখা যাচ্ছে না।

বাসাবো এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পুলিশ সদস্যদের তৎপরতা। কোথাও অধিক মানুষের ভিড় দেখলেই তারা সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। একই সঙ্গে হ্যান্ড মাইকে করে করোনা ভাইরাসের বিরূপ দিক নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে। প্রতিকারের উপায়ও বাতলে দিচ্ছেন তারা।

এখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্য হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বারবার মানুষকে ঘরে থাকতে বলছি। জরুরি কাজ থাকলে তো বের হতেই হবে। তাদের আমরা সহযোগিতাও করছি। কিন্তু যারা অকারণে ঘর থেকে বের হচ্ছেন, তাদের বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থানেই থাকবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২০
ডিএন/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ