ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ত্রাণ পেয়ে দু’দিনের জন্য নিশ্চিন্ত প্রতিবন্ধী সাবলু

সাভার করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২০
ত্রাণ পেয়ে দু’দিনের জন্য নিশ্চিন্ত প্রতিবন্ধী সাবলু

সাভার (ঢাকা): শারীরিক প্রতিবন্ধী সাবলু আকন্দ। জন্মের পর থেকে ৩৮ বছরেও পায়ে হাঁটা-চলার সৌভাগ্য হয়নি তার। পরিবারে অভাব-অনটন থাকায় ঠিকমত দু’বেলা ভাত খেতে পারতেন না। 

তাই বাচাঁর আশায় অক্ষম পা নিয়ে বগুড়া থেকে ঢাকায় কাজের জন্য এসেছিলেন আকন্দ। কিন্তু পা অক্ষম থাকায় ঢাকা এসেও কাজ জোগাতে পারেননি।

তাই বাধ্য হয়েই আশুলিয়ায় থেকে ভিক্ষাবৃত্তিতে নাম লেখান মাটি ঘেঁষে পথ চলা সাবলু।  

দীর্ঘ কয়েক বছর আশুলিয়ায় ভিক্ষা করার পর বিয়ে করেন খাদিজা আক্তার নামের এক নারীকে। বিয়ের ৭ বছরের মাথায় তিন সন্তানের জনক হন সাবলু। ভিক্ষার টাকায় ভালোভাবেই চলছিলো তার পাঁচ সদস্যের সংসার। কিন্তু হঠাৎ করোনা ভাইরাসের কারণে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পরে সাবলু আকন্দের। সারাদেশে এই ভাইরাসটির সংক্রমণ রোধে গত কয়েকদিন ধরে সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় বাইরে বের হয়ে ভিক্ষার থলে পাততে পারেননি তিনি। তাই ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছেন।

এরই মধ্যে শনিবার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে ত্রাণ পেয়ে চিন্তা মাখা মলিন অসহায় সাবলুর মুখ যেন নিমিষেই হাঁসিতে ফুটে উঠে। শুধু সাবলুই নয় তার মত প্রায় ২০০ অসহায় মানুষ ত্রাণ পেয়ে কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে।  

প্রতিবন্ধী সাবলু আকন্দ ত্রাণ হাতে নিয়ে নিশ্চিন্ত ভাবে বাংলানিউজকে বলেন, আমি ভিক্ষা করে সংসার চালাই। ভিক্ষা করে যা পাইতাম তা দিয়ে আমার ভালোই চলতো। কিন্তু করোনার কারণে গত দুই দিন থেকে খুব খারাপ অবস্থা যাচ্ছিলো। ২ ছেলে ১ মেয়েদের মুখে ভাত তুলে দিতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছিলাম।  

তিনি আরও বলেন, পাশের লোকজনের কাছ থেকে শুনে ত্রাণ নিতে আসি। ত্রাণ নিতে এসে এতো মানুষের ভীড় দেখে ভেবেছিলাম পাবই না। কিন্তু প্রতিবন্ধী হওয়ায় ত্রাণের একটি বস্তা পাই। এই ত্রাণে মোটামুটি দুই-তিনদিন চলতে পারবো। আল্লাহ এই করোনাকে তুলে নিয়ে সবাইকে বাঁচিয়ে রাখুক।  

ত্রাণ দাতা আশুলিয়া থানা যুবলীগ নেতা রজান ভূঁইয়া বলেন, সংকটের এই সময়ে অসহায়দের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমি খুশি। সংকটকালীন সময়ে প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় দুস্থ-অসহায়দের কিছু দেওয়ার চেষ্টা করি। প্রতিটি ত্রাণের বস্তায় ৫ কেজি চাল, ১ কেজি পেয়াজ, ১ কেজি লবন, ১ কেজি আলু, ১ কেজি ডাল, সয়াবিন তেল ও সাবান রয়েছে। আগামীতে আমার সামর্থ অনুযায়ী সবাইকে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করবো। দুর্যোগকালীন সময়ে আমি দ্বায়িত্ব নিয়ে প্রতিবন্ধী সাবলু আকন্দের পরিবারের তিন বেলা খাবারের ব্যবস্থা করবো।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০২০
এমআরএ  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।