বিভিন্ন জেলা থেকে যে যেভাবে পারছে পায়ে হেঁটে, রিকশা করে অথবা ভ্যানে করে ছোটো ছোটো যানবাহনে শত দুর্ভোগের মধ্যে করোনা আতঙ্ক মাথায় নিয়ে ফিরছেন তারা। গণপরিবহন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে শত শত শ্রমিক।
সরজমিনে শিল্প অঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ায় ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বিভিন্ন স্থানে এমন চিত্র দেখা যায়।
যাত্রাপথে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সিঅ্যান্ডবি এলাকা কথা হয় সুমনের সঙ্গে। তিনি আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। আগামীকাল কারখানা খোলা তাই সৈয়দপুর থেকে পায়ে হেঁটে, রিকশা করে সাভারে এসেছেন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, একদিকে সরকার অঘোষিত লকডাউন দিয়েছেন। অন্যদিকে, আমাদের কারখানার মালিকরা কারখানা খোলা রেখেছে। আমরা শ্রমিকরা এখন কোথায় যাবো। কারখানায় না আসলে চাকরি থাকবে না অন্যদিকে বাড়ি থেকে ফিরে আসতেও গাড়ি পাচ্ছি না।
আরেক শ্রমিক আকলিমা আশুলিয়ার এমকে অ্যাপারেলসে কাজ করেন। তিনি বাংলানিজকে বলেন, বাড়ি থেকে হেঁটে, রিকশায় অনেক কষ্ট করে আসচ্ছি। কাল অফিস খোলা। এর মধ্যে কিছুক্ষণ আগে বাসা থেকে ফোন দিয়ে বাড়িওয়ালা বললেন বাসায় যেনো না আসি। না পারছি বাসায় যেতে, না আবার বাড়ি ফিরে যেতে পারছি। আমি এখন কোথায় যাবো।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমত বলতে চাই, একই দেশে দুই নিয়ম। যেখানে সরকারি কর্মকর্তারা ঘরে থাকবে আর পোশাক শ্রমিকরা কারখানায় যাবে। এটা শ্রমিকদের প্রতি খুবই একটি অবিচার। পোশাক কারখানার সংশ্লিষ্টরা বলছেন শ্রমিকরা কারখানায় আসবে কিন্তু শ্রমিকরা কারখানায় কিভাবে আসবে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। এবং শ্রমিকরা গ্রাম থেকে এতো লোকের ভেতরে আসতেছে তাদের সংক্রমণ হবে সেই বিষয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই। শ্রমিকরা কাজ করার জন্য পায়ে হেঁটে আসছে এর মত নির্মম ও নিষ্ঠুর আর কিছু হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, মালিক ও সরকার এখন যে ভূমিকায় আছে এটি আমরা নিন্দা জানায়। এবং আগামী ১১ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ও শ্রমিকদের যেনো কোনোভাবে হয়রানি না হতে হয় সে বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জাবেদ মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, কারখানা খোলা থাকলে শ্রমিকদের যেতে হবে। আমাদের নির্দেশনা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে সচেতন করা। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০
এনটি