ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা: রামগতি-কমলনগরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে সমন্বয় নেই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২০
করোনা: রামগতি-কমলনগরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে সমন্বয় নেই

লক্ষ্মীপুর: করোনা সংকটকালে লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও কমলনগর উপজেলায় দরিদ্র ও নিন্ম আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিরতণে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছে। যে যার যার মতো করে বিতরণ করছেন। এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ একাধিকবার পাচ্ছেন আবার বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকেই ।
 

গত কয়েকদিন থেকে সরকারি ত্রাণ ছাড়াও রাজনীতিবিদ, বিত্তশালী ব্যক্তি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বিভিন্নভাবে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করে আসছেন। লোক দেখানোর জন্য হাটে-বাজারে জনসম্মুখে খাদ্যসামগ্রী বেশি বেশি বিতরণ করা হলেও মেঘনাপাড়ের অসহায় ও চরাঞ্চলের দরিদ্র লোকজনের মধ্যে বিরতণে বৈষম্য হচ্ছে বলে সমালোচনা রয়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলি, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুজ জাহের সাজু, কেন্দ্রীয় যুব লীগ নেতা তাসবীরুল হক অনুর দেওয়া খাদ্যসামগ্রী এবং সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুনের দেওয়া এক হাজার মাস্ক বিরতরণ করা হয়েছে। এসব তাদের অনুসারীরা যার যার মতাে করে বিতরণ করেছেন। বিতরণে কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় করেনি বলে জানা গেছে। এছাড়াও ব্যক্তি ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তাদের মন মতাে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করছেন সমন্বয় ছাড়া।

রামগতি ও কমলনগর ইউএনও কার্যালয় থেকে জানা গেছে, রামগতি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়নে ১৮ টন চাল ও প্রত্যেক ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ১০ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে কমলনগর উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ১৮ টন চাল ও ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভার জনপ্রতিনিধিরা এসব বিতরণ করেন।

কমলনগর উপজেলার চর লরেন্স ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  মো. নূর নবী চৌধুরী বলেন, চর লরেন্স ইউনিয়নের অনেক অসহায় পরিবারের মধ্যে করোনা সংকটের খাদ্য পৌঁছেনি। প্রত্যেক ওয়ার্ডে তালিকা তৈরি করে যথাযথভাবে দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

কমলনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ওমর ফারুক সাগর বলেন, যারা যারা ত্রাণ সামগ্রী  বিতরণ করবেন একজন অপরজনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সব অসহায়দের কাছে পৌঁছবে।
 
রামগতি উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন হেলাল বলেন,  খাদ্যসামগ্রী বিতরণে কোনো সমন্বয় নেই। এ মুহূর্তে উপজেলায় কন্ট্রোলরুম করে সেখানে সবাই ত্রাণের অর্থ বা খাদ্যসামগ্রী জমা দেওয়া যেতে পারে। প্রশাসনিক কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি রাজননৈতিক নেতা ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে তালিকা তৈরি করে অসহায়দের মধ্যে ওইসব খাদ্যসামগ্রী বিরতণ করলে কেউ বঞ্চিত হবে না।

কমলনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বাপ্পি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের ৯০০ প্যাকেট ত্রাণসামাগ্রী কোনো প্রকার সমন্বয় ছাড়াই বিতরণ করা হয়েছে।

রামগতি প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল হক বলেন, সব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে মিলে ত্রাণ দিলে সমবন্টন হতো। অসহায়রা বাদ পড়তো না।

কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন বলেন, এখন থেকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে হবে। প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় থাকতে হবে। কেউ একাধিকবার পাবেন আবার কেউ বঞ্চিত হবেন এমনটি যাতে না হয় সে বিষয়গুলো যথাযথভাবে দেখা হবে। যে কেউ এসে যে কোনো স্থানে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করতে পারবে না। পুলিশকেও জানাতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের মাধ্যমে বিতরণ করতে হবে।  

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মোমিন বলেন, ওয়ার্ড অনুযায়ী দরিদ্রের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। সব অনুদান এক জায়গা থেকে বিরতণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০
এসআর/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ