ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

দুখিনী মাধবীর জীবনে নতুন দুঃখ নিয়ে এলো করোনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২০
দুখিনী মাধবীর জীবনে নতুন দুঃখ নিয়ে এলো করোনা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: মাধবী বর্মণ। বসবাস ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভাদুঘর ঋষিপাড়ায়। পার করেছেন জীবনের ৭০টি বছর। তার এই সত্তর বছরের জীবনে সুখের থেকে দুঃখের পাল্লাটাই বেশ ভারী। 

স্বামীকে হারিয়েছেন বছর পনের আগে। তারপর ছেলে প্রদীপ বর্মণ ও তার বউকে নিয়ে টানতে থাকেন জীবনের ঘানি।

ছেলের উপার্জনে মালতি সুখের কিছুটা স্বাদ পেয়েছিলেন, কিন্তু নিমর্ম ভাগ্য তাতেও যেন বাধ সাধলো। দু'বছর আগে জটিল রোগে আক্তান্ত হয়ে মারা যান একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলে প্রদীপ। তারপর থেকে মালতীর কাছে জীবনটা এক বিভীষিকাময় অধ্যায়। কিশোর নাতির উপার্জনে ভর করে চলছিল পরিবারটির চাকা। এরই মধ্যে করোনা যেন জীবনের সেই ক্ষতগুলোকে নতুনভাবে ক্ষুরিয়ে দিল। করোনার প্রভাবে শ্রমিক নাতি বেকার হয়ে পড়ায় গত ছয়দিন ধরে পরিবারে প্রতিটি সদস্য অর্ধহারে দিন কাটাচ্ছেন।

এমন সময় জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া ১০ কেজি চাল তার কাছে যেন এক বিশাল প্রাপ্তি।

শুক্রবার (০৩ এপ্রিল) জেলা শহরের ভাদুঘর ঋষিপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ সাবানসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য পেয়ে আপ্লুত কন্ঠে মালতি এভাবেই প্রতিবেদককে তার কষ্টের কথা জানান।  

মালতির মত সরকারি সহায়তা হিসেবে ত্রাণ পাওয়া ঋষি পল্লীর শান্ত ঋষি, ভারত ঋষি, রীনা ঋষি, জ্যোতি ঋষিসহ ১১২ পরিবারের সদস্যদের চোখে মুখে ছিল স্বস্তির ছাপ।

ত্রাণ বিতরণ শেষে জেলা প্রশাসক হায়াৎ উদ-দৌলা খান বলেন, জেলায় ত্রাণের কোনো সংকট নেই। ইতোমধ্যে জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিক, নিম্ন আয়ের মানুষ ও সুবিধা বঞ্চিতদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এসব সামগ্রী দেওয়া হয়েছে। আমরা তালিকা করছি। সুবিধাবঞ্চিত সবার বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরো জানান, কেউ যেন বিনা প্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের না হন। যেসব নিম্ন আয়ের মানুষের সাহায্যের প্রয়োজন আমাদের জানালে সাহায্য বাসায় পৌঁছে যাবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পঙ্কজ বড়ুয়া, সহকার কমিশনার (ভূমি) এবিএম মজিউজ্জামান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত বৈদ্য, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক দীপক চৌধুরী বাপ্পি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন জামী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।