ঢাকা, বুধবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোই ভরসা দুই উপজেলার ২০ হাজার মানুষের 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০২০
ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকোই ভরসা দুই উপজেলার ২০ হাজার মানুষের 

পটুয়াখালী: পটুয়াখালী সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের চরবলইকাঠী-খারিজ্জমা এলাকায় দীর্ঘ ৯ বছর ধরে ধরান্দি-পাতাবুনিয়া নদীর ওপর স্থানীয়ভাবে তৈরি বাঁশ ও গাছ দিয়ে নির্মিত ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়েই দৈনিক প্রায় বিশ হাজারেরও বেশি মানুষ পারাপার হচ্ছে। 

দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় রোদ-বৃষ্টি ও কুয়াশায় সাঁকোর দড়ি নরম হয়ে যাওয়ায় যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

সদর উপজেলার শেষ প্রান্তে এবং গলাচিপার শুরুতে কমলাপুর ইউনিয়ন ও খারিজ্জমা বাজারের এই বাশের সাঁকোটি দুই উপজেলার সংযোগ স্থাপন করছে।

জেলা শহরের সঙ্গে চলাচলে জন্য তৈরি এই সাঁকোটির কারণেই স্থানীয়দের আট কিলোমিটার পথ কম পাড়ি দিতে হচ্ছে। এছাড়াও এই এলাকার কাছাকাছি হাসপাতাল, স্কুল-কলেজ, বাজার না থাকায় মুমূর্ষু রোগীর জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও ওই নড়বড়ে সাঁকোর উপর দিয়ে হাসপাতালে নেওয়া দুরূহ ব্যাপার হয়ে পড়েছে।

অপর পাড়ে খারিজ্জমা মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজে প্রতিদিন এক হাজার শিক্ষার্থীসহ হাট-বাজারের জন্য কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও পথচারী পারাপার হয়। কমবয়সী শিক্ষার্থীরা ঝুঁকিপূর্ণ ওই সাঁকো পার হয়ে প্রতিনিয়ত স্কুলে যাওয়া আসা করে।

নদীটির অপর পাড়ে স্কুল-কলেজ, এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র ও ব্যবসা বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র বিন্দুসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য এই সেতুই একমাত্র ভরসা।

সদর উপজেলার কমলাপুর ইউনিয়নের চরবলইকাঠী-খারিজ্জমা নদীর ওপর স্বাধীনতার আগে থেকে এলাকাবাসী একটি ব্রিজের দাবি করলেও দীর্ঘ সময়ে তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে দীর্ঘ অপেক্ষার পর স্থানীয় গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে ২০১১ সালে নির্মাণ করেছেন বাঁশের সাঁকো। কিন্তু সংস্কারের ছয় মাস যেতে না যেতেই সেই সাঁকো নড়বড়ে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এই ঝুঁকিপুর্ণ সাঁকো দিয়েই বাধ্য হয়ে চলাচল করছে মানুষ।

বর্তমানে সাঁকোটি মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি মাসের মধ্যে বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার করা না হলে, যেকোন সময় ভেঙে পরে স্থায়ী জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে।  

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল হাওলাদার জানান, অতিদ্রুত সাঁকোটি সংস্কার করা না হলে যেমন দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে, তেমনি হাজার হাজার মানুষের পারাপারের দুর্ভোগ তো আছেই। সাঁকোটি বছরে ২বার সংস্কার প্রয়োজন হয়। দীর্ঘ বছর ধরে স্থানীয়রা চাঁদা দিয়ে সংস্কার করলেও, বর্তমানে আর সম্ভব হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, সাঁকোটি ভালভাবে সংস্কার করতে প্রায় এক লাখ টাকা ব্যয় হবে। আর যদি এভাবে সাঁকোটি সংস্কার করা হয়, তাহলে আগামী একবছর আর ভেঙে পড়ার ঝুঁকি থাকবে না।

সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লতিফা জান্নাতী বাংলানিউজকে জানান, ওই স্থানে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে একটি আয়রন ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে মাটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর পরবর্তী প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন হবে।

তবে সাঁকোটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে সরকারি বা বেসরকারি যেকোন ভাবে এলাকার হাজার হাজার মানুষের পারাপারের একমাত্র অবলম্বন বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পরার আগেই যেন সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় সে দাবি জানান স্থানীয়রা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।