শুক্রবার (৩ এপ্রিল) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জাতীয় চিড়িয়াখানা, সংসদ ভবন প্রাঙ্গণ, ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর, হাতিরঝিলসহ রাজধানীর বিভিন্ন নামকরা জায়গাগুলো ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বিকেলে মিরপুর চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া আর কেউই নেই এখানে।
সংসদ ভবন এলাকায় ঘুরতে এসে একাকী বসে থাকতে হবে তা ভাবতেও পারেননি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাফিজুর রহমান। কয়েকদিন ধরে কাজ নেই তার, ঘরে বসে থাকতে আর ভালো লাগছিল না। তাই বিকেল পাঁচটার দিকে মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোড থেকে হাঁটতে হাঁটতে এসেছেন সংসদ ভবনের দক্ষিণ এলাকায়। এসে দেখেন কোনো লোকজন নেই। এমনকি একজন হকারও নেই যে বাদাম কিনবেন!
রাস্তার পাশে ইটের সীমানা দেয়ালের উপর বসে মোবাইল ফোনে এটা-সেটা করে সময় কাটাচ্ছিলেন হাফিজুর। এ সময় ঘুরতে আসা ঝুঁকিপূর্ণ কিনা জানতে চাইলে বলেন, কি আর করবো, কাজ নেই একদম। বাসায় থাকতেও আর ভালো লাগছে না, তাই আজ সপ্তাহখানেক পর একটু বের হলাম।
বিকেলে রবীন্দ্র সরোবরে মাত্র দু'জন আড্ডা দিয়েছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। ধানমন্ডি ১৫ নম্বরের বাসিন্দা সাকিবুর রহমান আড্ডা দেন বন্ধুকে নিয়ে। তাদের আশপাশে এমনকি পুরো এলাকায় অন্য কাউকে দেখা যায়নি এ সময়। কৌতুহলী হয়ে জিজ্ঞেস করতেই সাকিবুর রহমান বলেন, ছুটির দিনের বিকেলে এখানে বসার জায়গা পাওয়া যেত না অথচ এখন পাঁচজন লোকও নেই। আমরা ছাড়া আর দু'জন ছিলেন তারা একটু আগে চলে গেছেন।
একই অবস্থা রাজধানীর হাতিরঝিলের। রোজ বিকেলেই হাতিরঝিলের চার কিলোমিটার সড়কের ফুটপাত-রেস্তোরাঁগুলো লোকে-লোকারণ্য থাকে। অথচ বিকেলে পুরো হাতিরঝিল ঘুরে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ দেখা যায় যাদের প্রায় সবাই আশপাশের বাসাবাড়ির।
শেষ বিকেলে হাতিরঝিলের রাস্তার ফুটপাত ধরে মাস্ক পরে হাঁটছিলেন তেজকুনি পাড়ার বাসিন্দা আব্দুর রহমান। কথা হলে বলেন, আমাদের একটা ২৫/৩০ জনের দল ছিল যারা রোজ সকাল-সন্ধ্যায় হাঁটাহাঁটি করতাম। কিন্তু এখন সেই অবস্থা নেই। ঢাকা শহরকে কেমন এতিমের মতো লাগছে। কোলাহল না হলে আমাদের ভালো লাগে না। আর যারা এখানে হাঁটতে বা শরীর চর্চা করতে আসতেন, তারা এখন ঘরেই এসব করছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, এপিল ০৩, ২০২০
এইচএমএস/আরবি