বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুরের ইসিবি চত্বর, বাউনিয়াবাঁধ,কালশিরোড, প্যারিস রোড, ঝুটপট্টি, বেনারসি পল্লী, মুসলিম বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। তবে, মিরপুর ১, ২, ৬, ৭, ১০, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বরের প্রধান সড়ক ফাঁকা দেখা যায়।
এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রধান সড়কগুলোতে দোকানপাট বন্ধ থাকলেও শাখা সড়কের ভেতরে চায়ের দোকান, ফলের দোকান, সেলুনসহ প্রায় সব দোকানই খোলা রয়েছে। মানুষজন মাস্ক ব্যবহার করলেও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখছে না। মিরপুরের প্রধান সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ির পাশাপাশি বেড়েছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা।
মিরপুরের প্যারিস রোড, ঝুটপট্টি, বেনারসি পল্লী, মুসলিম বাজারের অলিগলিতে লোকসমাগম চোখে পড়ার মতো। এসব এলাকার সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের নির্দেশনার বিষয় জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর করেননি। তবে দেখে মনে হচ্ছে, কেউ এ মানছেন না সরকারি নির্দেশনা।
মিরপুর-১ নম্বরে বাজার করতে আসা জিশান আহমেদের সঙ্গে কথা হয় বাংলানিউজের। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে বাজার করেছিলেন। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনার জন্য অনেকটা বাধ্য হয়েই বাসার বাইরে বের হয়েছি।
মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পাঠাওচালক রিয়াজ বলেন, দু’দিন পরে আজকে বাসা থাকে মোটরসাইকেল নিয়ে বের হলাম। এখন পর্যন্ত কোনো ট্রিপ হয়নি। হাত একদম খালি, চলার মতো টাকা নেই। তাই বাধ্য হয়েই বাসা থেকে বের হয়েছি। সড়কে পুলিশ সার্জেন্ট তেমন কিছুই বলছেন না। কোন প্রকার মামলা ও দিচ্ছেন না। যাত্রী নেই। তবে, পুলিশ সদস্যরা বাসা থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছিন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নু বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ যথেষ্ট সচেতন হয়েছেন। অনেকেই সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার চেষ্টা করছেন।
অলিগলিতে লোকসমাগম বাড়ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মিরপুরের এসব এলাকায় অধিকাংশ বিহারিদের বসবাস। তারা কারও কথাই শোনেন না। তাদের কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। একসঙ্গে মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে আড্ডা দেন, গল্প করেন। সেনাবাহিনী দিয়েও তাদের ঘর থেকে বের হওয়া বন্ধ করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য শুক্রবার পুলিশ নিয়ে বিহারিদের ঘর থেকে বের না হওয়া ও শাখা সড়কে যেন কেউ আড্ডা না দেয় এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান বলেন, মিরপুরের আমার আওতাধীন এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি ভালো। মানুষজন ঘরে থাকছেন। বুধবারের তুলনায় আজকে রাস্তাগুলো বেশ ফাঁকা দেখেছি। আশা করি, শুক্রবার থেকে মিরপুরের সড়কগুলোতে লোকসমাগম আরও কমে যাবে। সরকার যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছে, আমরা ঠিক সেভাবেই করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০২, ২০২০
এমএমআই/ওএইচ/