ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২০
ছুটি বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি

ঢাকা: দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আরও পাঁচদিন অর্থাৎ আগামী ৫ থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়ে আদেশ জারি করা হয়েছে। পাশাপাশি ১০ ও ১১ এপ্রিলের সাপ্তাহিক ছুটিও এর সঙ্গে সংযুক্ত হবে।

বুধবার (০১ এপ্রিল) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর আগে মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ছুটি দিয়েছিলাম।

হয়তো আমাদের আরও কয়েকদিন বাড়াতে হতে পারে।

ছুটি বাড়ানো নিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, অনেকে গ্রামে চলে গেছেন। সেখানে যেন এ রোগের প্রার্দুভাব দেখা না দেয়। সে সময়টা হিসেব করে আমরা ১০ থেকে ১২ দিনের ছুটি দিয়েছিলাম। এটা ১৪ দিন করতে হবে। ৯ তারিখ পর্যন্ত হতে পারে। ছুটিটা সীমিত আকারে আমাদের একটু বাড়াতে হবে।

এর পরদিন জারি করা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ছুটি বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জরুরি পরিষেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা (ছুটি) প্রযোজ্য হবে না।

‘কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, খাদ্য, শিল্পপণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতায় থাকবে না। জরুরি প্রয়োজনে অফিসগুলো খোলা রাখা যাবে। প্রয়োজনে ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্প কলকারখানাও চালু রাখতে পারবে। মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস, পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। ’

জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গত ২৩ মার্চ মন্ত্রিপরিষদ ব্রিফিংয়ে ২৬ মার্চ থেকে সাপ্তাহিক ছুটিসহ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত টানা ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে এই ছুটির মধ্যে জরুরি সেবা ছাড়া সব বন্ধ থাকবে।

ওই দিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২৬ মার্চ সরকারি ছুটি, এর সঙ্গে ২৭-২৮ তারিখ সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। এর সঙ্গে ২৯ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হচ্ছে। ৩ থেকে ৪ এপ্রিল আবার সাপ্তাহিক ছুটি রয়েছে। তবে ওষুধের দোকান, কাঁচাবাজার সব খোলা থাকবে।

প্রথমবার ছুটি ঘোষণার দিন পর্যন্ত দেশে করোনা ভাইরাসে ৩৩ জনের সংক্রমণ ও তিনজনের মৃত্যুর মধ্যে সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল।

গত ৮ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪ জনে। মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন তিনজন। মোট সুস্থ হয়েছেন ২৬ জন।

করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর আগে ১৮ থেকে ৩১ মার্চ এবং পরে তা বাড়িয়ে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত নেওয়া হয়। আবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়িয়ে একেবারে রোজা ও ঈদের ছুটির সঙ্গে সংযুক্ত করা হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে, সাধারণ ছুটির মধ্যে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত গণপরিবহন বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ। আর মার্কেটগুলো ২৫ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে মালিক সমিতি।

ভাইরাসটি থেকে রক্ষায় জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের আহ্বানের মধ্যে বিভিন্ন দেশে লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা করছে সে দেশগুলোর সরকার। আমাদের প্রতিবেশী ভারতেও চলছে ২১ দিনের লকডাউন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২০
এমআইএইচ/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।