ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজধানীর পাড়া-মহল্লা-সড়কে প্রতিদিন বাড়ছে লোকসমাগম 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০২০
রাজধানীর পাড়া-মহল্লা-সড়কে প্রতিদিন বাড়ছে লোকসমাগম 

ঢাকা: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ (কোভিড-১৯) ঠেকাতে দুই দফায় সাপ্তাহিক ছুটিসহ ১৭ দিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এই সময়ের মধ্যে জনগণকে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে বারবার। প্রথমদিকে বিষয়টি নগরবাসী মানলেও ছুটির দিন যত গড়াচ্ছে রাজধানীর পাড়া-মহল্লার অলিগলি ও রাজপথে লোকসমাগম তত বাড়ছে। বাড়ছে ব্যক্তিগত যানবাহনের সংখ্যাও।

বুধবার (১ এপ্রিল) রাজধানীর মিরপুরের পীরেরবাগ, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, তালতলা, আগারগাঁও, সেনপাড়া, ভাষানটেক ও পল্লবী এলাকা ঘুরে দেখা যায় এ চিত্র।

এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রধান সড়কগুলোতে অবস্থানরত দোকানপাট বন্ধ থাকলেও অলিগলির ভেতরে চায়ের দোকান, টেইলার্স, কসমেটিক্সসহ প্রায় সব দোকানই খোলা রয়েছে।

সবাই মাস্ক ব্যবহার করলেও নিরাপদ দূরত্ব মানছেন না। এসব স্থানগুলোতে জনসাধারণের জমায়েত দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে জনসমাগম ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যাও বেড়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে মোটরসাইকেলের সংখ্যা।

এদিকে জনসমাগম ঠেকাতে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট দেখা গেছে। প্রাইভেট গাড়ি ও মোটরসাইকেল থামিয়ে জনগণকে বাড়ি থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করতে করছেন তারা। তবে অধিকাংশই গাড়ির যাত্রীদের অজুহাত মেডিক্যালে যাচ্ছি রোগী আছে। এই বলে তারা গাড়ি নিয়ে ছুটেছেন রাজধানীতে। তবে বেশ কিছু পাঠাও চালককে চেকপোস্টগুলোতে আটকালেও পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের চেকপোস্টএ ব্যাপারে পল্লবী জোনের এডিসি মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, জনগণকে সচেতন করতেই আমাদের এই অভিযান চলছে। তবে নানা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে রাজপথে আসছেন। সবাইকে নিজ থেকেই এই রোগ প্রতিরোধে সচেতন হতে হবে।  

পাড়া-মহল্লায় জনসমাগম বাড়ছে এ ব্যাপারে প্রশাসন কী ব্যবস্থা নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের সবগুলো টিম পাড়া-মহল্লায় যাচ্ছেন। যেখানেই টি-স্টল দেখছেন সেটি বন্ধ করে দিচ্ছেন। আমরা জনসমাগম যাতে না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করে যাচ্ছি। তবে পাহারা দিয়ে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয় যদি আমরা নিজেরা সচেতন না হই।

এদিকে জীবনের তাগিদে বাধ্য হয়েই বের হয়েছেন পাঠাও চালক সোহাগ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আজ কয়েকদিন গাড়ি চালাইনি। চলতে পারছি না, বাসায় বাজার নেই এই অবস্থায় অনেকটা বাধ্য হয়েই গাড়ি নিয়ে আজ বের হলাম। সকাল থেকে দু’টি ট্রিপ মেরেছি। পুলিশ চেকপোস্টে আটকেছিল। বলেছি বাসায় বাজার নেই। পরে তারা ছেড়ে দিয়েছেন।

অন্যদিকে মেয়ে তরমুজ খাবেন এজন্য মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশন থেকে ১০ নম্বর গোলচত্বর এ তরমুজ কিনতে এসেছিলেন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করা তাজুল ইসলাম। তরমুজ কিনে ফেরার পুলিশের পথে চেকপোস্টে পড়েন তিনি। বাসা থেকে বের হয়েছেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন বাসায় সবাই লকডাউনে আছে আমি ছাড়া। মেয়ের বয়স পাঁচ বছর বায়না ধরেছে তরমুজ খাবে তার বায়না রাখতে গিয়েই বাসা থেকে বের হওয়া। তবে সচেতনভাবেই বাসা থেকে বের হয়েছি এবং বাসায় প্রবেশের আগেই হাত পা ধুয়ে প্রবেশ করবো।

প্রতিনিয়ত আমাদের দেশেও করোনা সংক্রমণজনিত স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় জনগণকে সচেতন ও বাসা থেকে বের না হতে র‌্যাব ৪ এর পক্ষ থেকে মিরপুরে বিভিন্ন সড়কে মাইকিং করতে দেখা গেছে।  

এভাবে লোকসমাগম বাড়তে থাকলে প্রতিনিয়ত করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি আরো বাড়বে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২০
এসএমএকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।