বিশ্বব্যাপী করোনার প্রকোপ মোকাবিলায় দেশ থেকে দেশে বাড়ছে লকডাউন, জরুরি অবস্থার সময়কাল। বাংলাদেশ সরকারও বাড়িয়েছে ছুটি।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সকালের দিকে একটু কম বেরুলেও বিকেলে ভিড় বাড়ছে। যানবাহন বন্ধ থাকায় রিকশা, অটোরিকশাগুলোকে যাত্রী নিয়ে অহরহ ছুটতে দেখা গেছে বড় সড়কগুলোতেও। খুলছে চায়ের দোকানও। দোকানের ঝাপ অর্ধেক তুলে বিক্রি হচ্ছে চা-সিগারেট। সেখানে আবার হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন অনেকে। যেন চায়ের তৃষ্ণায় কাতর হয়ে ছিলেন। আবার অনেককে এলোমেলো, এদিক-সেদিক অযথাই ঘুরতে দেখা গেছে। জটলা করে রাস্তায় খোশগল্পেও মেতে ওঠছেন অনেকে।
ছোলমাইদে অর্ধ ঝাপ তোলা একটি চা স্টলে সিগারেট ফুকছিলেন রাহাত রাব্বী। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রাহাত বাংলানিউজকে বলেন, ‘দোকান তো খোলাই পাওয়া যায় না। এখন একটু একটু খুলছে। ভালোই লাগছে। চা খেতে পারছি। ’
করোনা নিয়ে এত ভেবে আর কি হবে-এমন মন্তব্য করেই আড়চোখে তাকালেন তিনি।
আগারগাঁওয়ের তালতলা বাজারে খোশগল্পে মেতে ওঠা একদল লোককে ‘সামাজিক দূরত্ব’ বজায় রাখার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে গেলে অনেকটা সমবেত স্বরেই বললেন- ভাই, আর কত! এছাড়া আমাদের কারো ভাইরাস নাই এটা নিশ্চিত। আর এজন্যই আড্ডা দিচ্ছি।
পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে-একজনের বেশি একসঙ্গে চলা যাবে না। বলা হচ্ছে-একজন আরেকজনের কাছ থেকে অন্তত তিন ফিট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিন্তু সাতদিনেই যেন এ নিয়মে হাঁপিয়ে ওঠেছে মানুষ।
নগরবাসীর এসব দায়িত্বহীনতার পরও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কিছুটা নমনীয়। পুলিশের কিছু গাড়ি ঘোরাফেরা করছে ঠিক, তবে জটলা ভেঙে দেওয়ার মতো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
কেবল রাজধানীই নয়, ঢাকার বাইরে থেকেও একই খবর আসছে। নিয়মের মধ্যে ঘরবন্দি থাকতে চাচ্ছে না কেউই। ফলে করোনা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময়টা বেশ কঠিন। এসময় ভালোভাবে পার করতে পারলে হয়তো অনেকাংশে বেঁচে যাবে বাংলাদেশ।
মিরপুরের বাসিন্দা আইনাল হক বলেন, ‘ঘরবন্দি থাকতে সবারই কষ্ট হচ্ছে। আর কষ্টটা যেন আরও না বাড়ে সেজন্য ছুটিটা দিয়েছে সরকার। কিন্তু এটা তো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ফলে ভয়টা থেকে যাচ্ছে। ’
তবে ঘরবন্দি না থেকে অনেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করায় অনেকটাই খুশি রিকশা চালকরা। তারা বলছেন-কয়েকদিন একশ টাকাও রোজগার করা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। এখন কিছুটা ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০২০
ইইউডি/এইচএডি/