ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

জাতীয়

রাজশাহীতে করোনা রোধ উদ্যোগে ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
রাজশাহীতে করোনা রোধ উদ্যোগে ধন্যবাদ জানালেন প্রধানমন্ত্রী

রাজশাহী: ‘রাজশাহীতে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে আগামীতে আরও ছয়-সাত মাস কোনো মানুষ কাজ না করতে পারলেও খাদ্য সহায়তা দেওয়া যাবে। এছাড়া রাজশাহীতে করোনা শনাক্ত মেশিন রিয়েল টাইম পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন বা আরটি পিসিআর যন্ত্র (পিসিআর) বসানোর কাজও শেষপর্যায়ে। বুধবার (০১ এপ্রিল) থেকে এখানে করোনা শনাক্তের কাজ শুরু হবে। যদিও রাজশাহী বিভাগ এখন পর্যন্ত করোনামুক্ত।’

মঙ্গলবার (৩১ মার্চ) সকালে গণভবন থেকে করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে ভিডিও কনফারেন্সে দেশের সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসকসহ মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রীকে এ তথ্য জানান রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।

আর এসব শুনে বিভাগীয় কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

কনফারেন্সের শুরুতেই রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, প্রথমেই আপনাকে সুখবর দিতে চাই। তা হলো, রাজশাহীর আট জেলায় এখনও করোনা সংক্রমিত কোনো রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। করোনার প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত সন্দেহভাজন ছয়জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কারও নমুনায় করোনা ভাইরাস পজেটিভ মেলেনি। এসময় প্রধানমন্ত্রী বিভাগীয় কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান।

রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে আরও জানান, আগামীতে করোনা রোগী পাওয়া গেলে বা পরিস্থিতির প্রয়োজন হলে এক হাজার ৬৮০টি বেড প্রস্তুত আছে। চিকিৎসা কাজে সংশ্লিষ্টদের জন্য এখন আর পারসোনাল প্রটেকশন ইকুইপমেন্টের (পিপিই) কোনো ঘাটতি নেই। বর্তমানে বিভাগে পাঁচ হাজার পিপিই মজুদ আছে।

প্রধানমন্ত্রীকে সরকারি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার হুমায়ুন কবীর খোন্দকার। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, রাজশাহীর দরিদ্র মানুষের খাদ্য সহায়তায় জিআর থেকে ৯২১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বর্তমানে দুই হাজার ৪০০ মেট্রিক টন চাল মজুদ আছে। নগদ ৮১ লাখ টাকা হাতে আছে। করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামীতে আরও ছয়-সাত মাস মানুষ কাজ না করতে পারলেও খাদ্য সহায়তা দেওয়া যাবে বলেও উল্লেখ করেন বিভাগীয় কমিশনার।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, দরিদ্র মানুষের প্রয়োজনে আরও টাকা ও খাদ্যা পাঠাব।

পরে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় লিফলেট ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণসহ সব ধরনের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে খাদ্য বিতরণ হচ্ছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

এদিকে, নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. হামিদুল হক। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, রাজশাহী জেলায় এখনও কারও করোনা শানাক্ত হয়নি। সন্দেহভাজন একজন রোগীর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু করোনার কোনো উপসর্গ মেলেনি। এছাড়া দরিদ্র মানুষ যাতে খাদ্য সংকটে না পড়ে, এজন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার মজুদ আছে। কোনো ব্যক্তি বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে না। এরইমধ্যে সব বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে সব ধরনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়ছে।

রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বুধবার থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে (রামেক) করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা শুরু হবে। রিয়েল টাইম পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশন বা আরটি পিসিআর যন্ত্র (পিসিআর) বসানোর কাজ শেষপর্যায়ে রয়েছে। এছাড়া করোনার চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যাবতীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে।

বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় থেকে ভিডিও কনফারেন্সের সময় পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) একেএম হাফিজ আক্তার, রাজশাহী মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সুজায়েত ইসলাম, রাজশাহী বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. গোপেন্দ্র নাথ আচার্য্যসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

রাজশাহী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের সময় রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহসহ সংশ্লিষ্ট আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৩ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
এসএস/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।