করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের প্রথম লকডাউন করা এলাকার নাম মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলা। ব্যস্ততার এই নগরে হঠাৎ করেই সবকিছু থমকে গেছে।
সবকিছু মিলিয়ে চারপাশের প্রকৃতির দৃশ্য বেশ মনোরম। অন্যান্য সময় আড়িয়াল খাঁ নদের এই চর এলাকায় বিকেল হলেই সাধারণ মানুষের আড্ডা বসে। দিনের কাজ শেষে বৈকালিক আড্ডা দিতে স্থানীয়দের অনেকেই নদীর পাড় ধরে ঘুরে বেড়ায়। ঘাসের ওপর বসে গল্প করে সময় কাটায়। নদীর পানিতে পা ভেজায়। শৌখিন মৎস্য শিকারীরা জাল নিয়ে নদীতে নামে। কিন্ত এই দৃশ্য যেন কিছুদিনের জন্য থেমে গেছে। করোনা ভাইরাসের সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা মাদারীপুর জেলার শিবচরের মানুষের মনে তাই আজ শঙ্কা-উৎকণ্ঠা আর সতর্কতা। মুক্ত মনে নদীর পাড় ধরে অবসর সময় কাটানোর ইচ্ছা জাগলেও মনটা দমে যায়। স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি এই মানুষের মন প্রকৃতির এই অপরূপ দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় আকুলি-বাকুলি করে। সরেজমিনে দেখা গেছে, তখন প্রকৃতি সন্ধ্যা ছুঁইছুঁই করছে। নদীর বিস্তৃর্ণ চরে দিয়ে গিয়ে নদীর পাড় ধরে হাঁটছে কেউ কেউ। কেউ আবার নদীর পাড়ের হাঁটু পানিতে নেমে হেঁটে বেড়াচ্ছে। পশ্চিম আকাশ লাল করে সূর্য তখন ডুবে যাচ্ছে দূরের গাছপালার নিচে! প্রকৃতিতে যেন এক অন্যরকম সৌন্দর্য! এমন দৃশ্য দেখতে খোলা আকাশের নিচে বা বিস্তৃর্ণ ফসলের ক্ষেতে বা নদীর চরাঞ্চল আসতে হবে। করোনা ভাইরাসজনিত শঙ্কায় দিন অতিবাহিত হওয়া মাদারীপুরবাসী প্রকৃতির এমন স্নিগ্ধতা দেখার অপেক্ষায় প্রহর গুণছে আজ। প্রত্যাশা দুর্যোগ কেটে গিয়ে আবার স্বাভাবিক হবে জীবন যাত্রা, কর্মব্যস্ততা।
শাহজাহান হাওলাদার নামে এক তরুণের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, সর্বোচ্চ সতর্কতা আর আল্লাহর কাছে প্রার্থনাই করোনা ভাইরাস থেকে আমাদের মুক্তি দিতে পারে। আমরা বেশ কিছুদিন ধরেই স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি রয়েছি। বাজরের দোকান-পাট বন্ধ। রাস্তায় নেই পরিবহনের কোলাহলও। সবকিছু কেমন যেন বিষন্নতায় জেঁকে ধরেছে। অনেক পর আজ বিকেলে একটু নদীর পাড়ে আসলাম। একা একা হাঁটছি। বিকেলের এই স্নিগ্ধ প্রকৃতি আর সূর্যাস্তের দৃশ্য দেখে মনটা ভরে যাচ্ছে। প্রকৃতির এমন স্নিগ্ধতা দেখার অপেক্ষায় রয়েছি। সব ধরনের শঙ্কা কেটে যাবে। আবার স্বাভাবিক হবে জীবনযাত্রা। এই প্রত্যাশাতেই কাটে এখন দিনরাত্রি।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২০
এএটি