প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন করোনা সংকটে অসহায়দের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া হবে। সেই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৩০ মার্চ) জেলা প্রশাসনের আওতায় শুরু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।
এরই ধারাবাহিকতায় অসহায়দের দ্বারে দ্বারে ত্রাণ নিয়ে ছুটছেন রাজধানীর মিরপুর জোনের এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার- ভূমি) সৈয়দ মুরাদ আলী। যারা প্রকৃত অসহায়, কোনো কাজ পাচ্ছেন না, তাদের হাতে ত্রাণ তুলে দিচ্ছেন তিনি। জনপ্রতি ১০ কেজি চাল, পাঁচ কেজি আলু ও দুই কেজি ডাল দেওয়া হচ্ছে।
সরকারের ত্রাণ পেয়ে কেঁদেই দিলেন শিবু রানী। তার স্বামী নেই। দুই মেয়ে নিয়ে বসবাস করেন মিরপুর শাহ আলী এলাকায়। তিনি মূলত মাটি কাটার কাজ করেন। কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কারণে হাত গুটিয়ে বসে আছেন।
বাংলানিউজকে শিবু রানী বলেন, এক সপ্তাহ হলো কেউ কাজে নেয় না। মাটি কাটা বন্ধ। খুব চিন্তায় ছিলাম। খাবার ছিল না ঘরে। ত্রাণ পেয়ে ভালো লাগলো। মেয়েদের নিয়ে কয়েকদিন খাইতে পারব।
এই ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে মূলত যাদের কাজ-কর্ম নেই, হাত গুটিয়ে বসে আছেন, একইসঙ্গে বয়স্ক, তাদের। মিরপুর এক নম্বর সনি সিনেমা হলের কাছে বসে আছেন রিকশাচালক মিলন মিয়া। তার দুই পা অক্ষম। তিনি ব্যাটারিচালিত রিকশা চালিয়ে অন্যান্য সময় দিনে এক হাজার টাকা আয় করলেও এখন রিকশার খরচই উঠছে না।
মিলন মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এমন ফাঁকা ঢাকা ঈদেও দেখিনি। মানুষ নাই, ভাড়া কী করে হবে। চালানের টাকা (রিকশার দৈনিক জমা খরচ ১৫০) উঠে না। বাড়ি ভাড়া কী করে দেব। ১৭ কেজি ত্রাণ পেলাম। অনেক উপকার হবে।
এই ভ্রাম্যমাণ ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে ঢাকার মিরপুর-০১, সদরঘাট, হাতিরঝিল, ডেমরা, কারওয়ান বাজার, ধানমন্ডি ও ফার্মগেটেও। সাতজন জন এসিল্যান্ড ৭০০ অসহায় পরিবারের মধ্যে ত্রাণ পৌঁছে দেবেন।
ভ্রাম্যমাণ ত্রাণ প্রসঙ্গে এসিল্যান্ড সৈয়দ মুরাদ আলী বাংলানিউজকে বলেন, আজ থেকেই শুরু হয়েছে ভ্রাম্যমাণ ত্রাণ কার্যক্রম। সাতটি স্পটে দেওয়া হবে। সামনে আরও বড় পরিসরে ভ্রাম্যমাণ ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০২০
এমআইএস/টিএ