ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

আবদ্ধ পরিস্থিতিতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
আবদ্ধ পরিস্থিতিতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

ঢাকা: রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে দুপুরে রিকশা চালক জমির উদ্দিন বসে বসে অলস সময় কাটাচ্ছিলেন। আগে দিনে যেখানে তিনি ছয়-সাতশ টাকা রোজগার করতেন এখন তা দুই-তিনশ টাকায় নেমে গেছে। তিনি বলেন, ‘কেউ এখন আর বাইরে আহে না। যদি সব কিছু বন্ধ হয়া যায়, খামু কী! সংসার কীভাবে চালামু বুঝতাছি না।’

রোববার (২৯ মার্চ) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামটর, শাহবাগ এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শুধু জমির উদ্দিন নয় বরং এখন সড়কে থাকা প্রায় সব রিকশা চালক ও নিম্ন আয়ের মানুষের অবস্থা একই ধরনের। একেতো কমে গেছে আয়, তার উপর রাস্তায় বের হতে হয় ঝুঁকি নিয়ে।

এ প্রসঙ্গে শাহবাগ মোড়ে বিশ্রামরত রিকশাচালক মো. শফি বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্রাম তো আর এমনি এমনি নেই না ভাই। কোনো কাস্টমার নাই। সকাল থেকে ১০০ টাকাও আয় হয়নি এখনো। দিনশেষে নিজে খেতে হবে আবার পরিবারের জন্য কিছু টাকা গ্রামেও পাঠাতে হবে। কোনো জমানো টাকাও নেই যে তা দিয়ে চলবো। এখন সব আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি।

পাশে থাকা দিনমজুর মঈনাল মিয়া বলেন, কাজ তো এখন একদমই নাই, তার উপর রাস্তায় বের হলে আবার পুলিশে ধরে, তাড়া করে। সরকার নাকি সহায়তা করবে, সেগুলো কীভাবে পাওয়া যায়, কোথা থেকে দেয়, তাও জানি না। এদিকে আবার বাজারেও দাম বেড়েছে সবকিছুর। আগে সারাদিন কাজ শেষে শাহবাগে ফ্লাক্সে করে চা আর সিগারেট বিক্রি করে কিছু ইনকাম করতাম, এখন তাও নাই।

ফাঁকা সড়ক।  ছবি: ডিএইচ বাদল

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু রিকশা চালক বা দিনমজুর নয়, ঢাকাসহ সারাদেশে পরিবহন খাতে যারা বাস মিনিবাসের ড্রাইভার, সুপারভাইজার বা হেলপার হিসেবে কাজ করেন তারাও মজুরি পান প্রতিদিনের ট্রিপ বা যাতায়তের ওপর। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিপাকে আছেন তারাও। আর অটোরিকশা ও রাইড শেয়ারিং-এ যারা কাজ করতেন তাদের অবস্থাও নাজুক।

এ প্রসঙ্গে বাংলামটর মোড়ে রাইডশেয়ারিং-এ কাজ করা আরিফুল ইসলাম দোলন জানান, যাত্রী ও যাতায়াত দু’টিই কমে যাওয়ায় তাদের আয় অনেক কমে গেছে। পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে তাদের হাতেও এখন তেমন কাজ নেই। আবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অন্ন সংস্থানে ঘর থেকে বের হতেই পড়তে হয় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নানা জেরার মুখে।

এদিকে বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, বাংলাদেশে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করেন। আর এই করোনা পরিস্থিতে শুধু তারাই নন, যারা চাকরিজীবী নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির তারাও আছেন সংকটে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
এইচএমএস/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।