ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা আতঙ্কে কষ্টে দিন কাটছে ছিন্নমূল মানুষের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
করোনা আতঙ্কে কষ্টে দিন কাটছে ছিন্নমূল মানুষের রান্না করছে ছিন্নমূল এক ব্যক্তি। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রাণঘাতী থাবায় আতঙ্কিত মানুষ। দেশে প্রতিদিন বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া প্রায় সবকিছুই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জনসাধারণকে বাসা-বাড়িতে থাকতে বলা হচ্ছে। এতেই বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার ছিন্নমূল মানুষ। যাদের ঘরই নেই, তারা কিভাবে ঘরে থাকবে এমন প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।

শনিবার (২৮ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি স্থানে ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে কথা বলে, তাদের কষ্টের কথা জানা যায়।

ফয়সাল নামে একজন ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ফয়সাল দুই মেয়ে এক ছেলে এবং স্ত্রীকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের ভেতরে বসবাস করতো।

বর্তমানে স্টেডিয়াম বন্ধ করে দেওয়ার কারণে তারা রমনা মার্কেটের নিচে অবস্থান নিয়েছে। কিন্তু এখানেও তারা থাকতে পারছেন না পুলিশের ভয়ে। ফুটপাতে ঘুমান্ত কয়েকজন ছিন্নমূল মানুষ।  ছবি: শাকিল আহমেদতিনি বাংলানিউজকে বলেন, ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে খুব কষ্টে আছি। দিনে রাতে পুলিশ আমাদের ধাওয়া দিচ্ছে। কোথায় যাবো আমরা, আমাদের তো যাওয়ার কোনো জায়গা নেই।

একই স্থানে কথা হয় রবিউল এবং নোমান নামে দুইজনের সঙ্গে। তারা বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের থাকার জায়গা নেই, খাবারের ব্যবস্থাও নেই। আগে সারাদিন কাগজ, প্লাস্টিকের বোতল কুড়িয়ে বিক্রি করে যা পাইতাম, তাই দিয়ে ডাল ভাত খাইতাম। রাতে স্টেডিয়াম বা আশ-পাশের মার্কেটে যেখানে পারতাম ঘুমাইতাম। কারও কাছ থেকে কিছু চেয়ে খাবো, সেই অবস্থাও নাই। কার কাছে চাইব, সবকিছুইতো বন্ধ, লোকজনতো নাই। কোনো জায়গায় বসে থাকতেও পারি না পুলিশে পিটায়।  বসে আছে ছিন্নমূল মানুষ।  ছবি: শাকিল আহমেদফার্মগেট ফুট ওভারব্রিজের উপরে থাকা সুমন নামের আরও একজন বলেন, কি ভাইরাস যে আইলো, আমাগো শান্তি হারাম কইরা দিছে এই ভাইরাস। খাইতে পারি না, ঘুমাইতে পারি না। মানুষতো ভয়ে বাড়ি থেকে বাইর হয় না। আমরা কই যামু কন আমাদেরতো কিছুই নাই। মরি আর বাঁচি আমাগো এই রাস্তাতেই থাকতে হইবো।   

শাহবাগ, কারওয়ান বাজারসহ আরও কিছু এলাকার ছিন্নমূল মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাসের কারণে তাদের একদিকে যেমন রাতে থাকার সমস্যা, আরেকদিকে আয় রোজগার না থাকায় খাবারের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতো রয়েছেই। এসব ছিন্নমূলের মানুষের সরকারের কাছে আবেদন যদি তাদের জন্য কোনো থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হতো অথবা অন্য কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সাহায্য সহযোগিতা করতো তাহলে তারা এই কষ্ট থেকে বেঁচে যায়।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
আরকেআর/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।