সম্প্রতি বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস সচেতনতায় এলাকায় প্রশাসনের মাইকিং ও পুলিশ টহল দেখে গত তিনদিন ভ্যান চালাতে বের হননি নূর আলী। কিন্তু টানাপড়েনের সংসারে রান্নার চাল-তরকারি কেনার উদ্দেশ্যেই সামান্য রোজগার করতে ভ্যান নিয়ে বের হন।
তিনি সকালে বাংলানিউজকে বলেন, ‘মেয়ে-জামাই আছে, প্রতিবেশী, ছেলে-স্ত্রী তাদের কিভাবে এ লজ্জার কথা বলব? এজন্যই কাউকে বলিনি, বিচার দিয়েছি ‘আল্লাহর কাছে’।
পরে পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ লাউড়ি গ্রামে গিয়ে কথা হয় এসিল্যান্ডের নির্দেশে ‘কান ধরা’ ভুক্তভোগী বাবু মোড়ল (৬৭) ও একই গ্রামের আসমত উল্লাহর (৭৪) সঙ্গে।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে বলেন, বাবু মোড়ল প্রতি বিকেলে অল্প কিছু তরকারি নিয়ে হাটের ফুটপাতের বসে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। সামান্য আয়ের টাকায় চার মেয়ে এক ছেলেকে বড় করেছেন। তিনিও অত্যন্ত গরিব। এছাড়া প্রবীণ আসমত উল্লাহ মাঠের আয়ে কোনোভাবে সংসার চালান। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়ে এক ছেলে-স্ত্রীকে নিয়ে গরিব হলেও সম্মানের সঙ্গে জীবন ধারণ করছেন।
ভুক্তভোগীরা বাংলানিউজকে বলেন, ‘এসিল্যান্ড স্যার’ আমাদের নাতির বয়সী। তিনি কোনো কিছু না জেনেই লোকজনের মধ্যেই আমাদের কান ধরে দাঁড়াতে বাধ্য করলেন। জীবনে আমরা কেউ এমন অপমানিত হইনি। শুধু তাই নই, এ ঘটনা মেয়ের জামাই-আত্মীয়-স্বজন জানলে তাদের সামনে যাওয়ার পরিস্থিতি কি থাকবে? জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এমন পরিস্থিতিতে পড়বো এটা ভাবিনি। তবুও আমরা অপরাধী, আল্লাহ আমাদের অপরাধ দেখেছেন ... তিনি যেন বিচার করেন!
বাংলাদেশ সময়: ২০২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
ইউজি/এএটি