ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

সুনসান নগরীতে হঠাৎ দেখা মেলে যানবাহনের

তামিম মজিদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
সুনসান নগরীতে হঠাৎ দেখা মেলে যানবাহনের

ঢাকা: করোনা ভাইরাসে কাবু বিশ্ব। গৃহবন্দী পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ। পৃথিবীর বড় বড় শহরগুলোর দৈনন্দিন জীবন-যাত্রাও যেন থমকে গেছে। 

সেই ভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশও কার্যত অচল। এ ভাইরাস রোধে দেশে চলছে অঘোষিত লকডাউন।

সরকারি অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি প্লেন, বাস ও রেলপথও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

যে ঢাকায় প্রতিনিয়ত থাকে সাধারণ মানুষের ব্যস্ততা। সেই দেড় কোটি মানুষের শহর ঢাকা এখন ফাঁকা। শব্দদূষণ আর নিত্য যানজটের শহর যেন বিরান ভূমি! হঠাৎ দুয়েকটা পরিবহনের দেখা মিলছে!

পড়ুন>>করোনার ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন তারা

গণপরিবহন নেই। ফুটপাতে নেই মানুষের পদচিহ্ন। নেই হকারের ঘোরাঘুরি কিংবা হাঁকডাক। এ সময়ে একজন ছিন্নমূল মানুষেরও দেখা মেলে না।

হঠাৎ এমন ছন্দপতনে চারশ বছরের রাজধানী ঢাকাও তার রূপ হারিয়েছে! জনমানবহীন ঢাকায় সুনসান পরিবেশ চারদিকে। মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকায় গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলে সরাসরি কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তাই নিস্তব্দ ঢাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে এ প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে যেতে পারছেন অনেকেই। যদিও জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না তেমন।  

শনিবার (২৮ মার্চ) এ শহরের কুড়িল বিশ্বরোড, ইসিবি চত্বর, মিরপুর ১০, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাড্ডা ও নতুন বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেলো, সড়কজুড়ে সেনাবাহিনী ও অাইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল।

গণমাধ্যম ও জরুরি সেবা ছাড়া অন্য সংস্থাগুলোর গাড়ি একেবারেই নেই। তবে কিছুক্ষণ পর পর হঠাৎ দেখা মেলে ব্যক্তিগত গাড়ির। তবে কোথাও অাইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাঁধার মুখে পড়তে কোনো প্রাইভেট কারকে দেখা যায়নি।  

দেখা গেল, রাজধানীর  মাঝে মধ্যে খালি সড়কে হু হু করে ছুটে চলছে এসব প্রাইভেট কার ও বাইক। এছাড়া প্রধান সড়কে রিকশাও চলছে। সবাই নিজ গন্তব্যে অাপন মনে ছুটছে।

অনেকেই বলছেন, এমন যানজটহীন নগরী ঢাকা যদি হতো। তবে কেউ কেউ বলছেন ভিন্ন কথা, তারা এমন জনমানবহীন শহর চান না। এর চেয়ে যানজটই ভালো তাদের কাছে।  

ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে জরুরি কাজে বের হয়েছেন একটি বেসরকারি কোম্পানির কর্মকর্তা সাইফুল অালম।

বাংলানিউজকে তিনি বলেন, একটি জরুরি কাজ ছিলো, তাই বের হতে হলো।  

অারেকটি গাড়ির চালক মিয়াজাহান বলেন, একজন অাত্মীয় গুরুতর অসুস্থ। তাই তাকে দেখতে যাচ্ছি। না হয় বের হতাম না, বাসায়ই থাকতাম।  

একটি জরুরি সেবা সংস্থার কর্মকর্তা মেহেদী বলেন, এমন জনমানবহীন ঢাকা অামরা চাই না। এর চেয়ে বরং যানজটই ভালো। এ শহরের স্মৃতিতে জড়িয়ে অাছে এসব মানুষ ও যানজট।  

ঢাকার অারেক বাসিন্দা হোসেন বলেন, অন্য দিনের তুলনায় শনিবার অাইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জেরার মুখে কম পড়তে হয়েছে। ব্যাংকে জব করি, তাই করোনা অাতঙ্ক সত্ত্বেও প্রতিদিন অফিস করতে হয়।  

রাজধানীর একটি স্পটে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা অাবুল খায়ের বলেন, অামরা করোনা সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে কাজ করছি। সবাইকে বুঝিয়ে বলছি, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
টিএম/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।