বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) থেকে ১০ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে দেশজুড়ে। এই সময়ে করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রোধে এবং স্ব স্ব নিরাপত্তায় জনগণকে নিজ নিজ অবস্থান বিশেষ করে বাসায় থাকতে বলা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে।
রাজধানীর গাবতলী এলাকায় দায়িত্বরত ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক সার্জেন্ট ঝোটন সিকদার বলেন, ‘ঝুঁকি আছে তাও কাজ করে যেতে হবে। সড়ক ফাঁকা, এর মাঝে কেউ বেপরোয়া গাড়ি চালালে দেখতে হবে। ঘর থেকে কেউ যথোপযুক্ত কারণ ছাড়া বেরোলে পুলিশের পাশাপাশি আমরাও দেখছি। আমাদের কাজ ট্রাফিক নিয়ে কিন্তু সড়কে ট্রাফিক না থাকলেও আমাদের কাজ শেষ হয়ে যায় না। আমাদের নিরাপত্তার জন্য তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। রেইন কোটকেই পিপিই বানিয়েছি। নির্দেশনা আছে ইউনিফর্মে ফুল হাতা শার্ট পরার। এই গরমে ফুল হাতা শার্টের ওপর মোটা রেইনকোট গায়ে দিয়ে ডিউটি করছি। ’করোনা ইস্যুতে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন চিকিৎসকেরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের এনেস্থেশিয়া বিষয়ক জুনিয়র কনসালটেন্ট এনেস্থেশিওলজিস্ট ডা. তৌহিদ আহমেদ বলেন, ‘আমরা চিকিৎসকরা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছি। দেশে তো করোনায় চিকিৎসকেরা আক্রান্তও হয়েছেন। আমাদের কাছে সব ধরনের রোগী আসেন। কে করোনায় আক্রান্ত চট করে তো বোঝা যায় না। আর কাউকে তো আমরা চিকিৎসা না দিয়ে ফেলে রাখতে পারি না। পেশার প্রতি আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাসায় গেলে বা বাসা থেকে বেরোলে স্বজনেরা কান্নাকাটি করেন। বলে ডাক্তারি পেশা ছেড়ে অন্য কিছু যেন করি। স্বজনদের এটা বুঝিয়েই বাসা থেকে বের হই যে, আমার মতো সবাই যদি ডাক্তার বা নার্স হওয়া বন্ধ করে দেয় তাহলে তোমাদের কারও কোনো অসুখ হলে চিকিৎসা দেবে কে? যা হয় হবে, আল্লাহ ভরসা। চিকিৎসকদের অনেকেই অনেক কথা বলেন। দুই একজন একটু অন্যরকম থাকতেই পারেন। কিন্তু আমি এবং আমার মতো প্রায় সব চিকিৎসকই এই দুঃসময়ে জনগণের পাশে তাদের সেবায় আছি। ’
করোনার মতো এমন জটিল পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে সর্বশেষ এবং বস্তুনিষ্ঠ সঠিক সংবাদের জোগান দিতে কাজ করে যাচ্ছেন গণমাধ্যমকর্মীরাও। দেশের অন্যতম শীর্ষ অনলাইনভিত্তিক গণমাধ্যম বাংলানিউজটোয়েন্টিফোরের সম্পাদক জুয়েল মাজহার বলেন, ‘বাংলাদেশে প্রায়ই ‘গুজব’ বিষয়টি দেখা যায়। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই অনেক ধরনের গুজব রটিয়ে থাকেন। এসব গুজবের অসত্যতা সাধারণ নাগরিকেরা চট করেই বুঝতে পারেন না। আর ঠিক তখনই মূল ধারার গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা এবং ভূমিকার বিষয়টি সামনে চলে আসে। একটি তথ্য সঠিক না ভুল তা মূল ধারায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের সঙ্গে তুলনা করে দেখা যায়। কাজেই এমন সংকট মুহূর্তে আমরা গণমাধ্যমকর্মীরা আমাদের দায়িত্ব থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না। জানি ঝুঁকি আছে, বিশেষ করে ফিল্ড রিপোর্টারদের, তবুও তার মাঝেই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত সতর্কতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
এসএইচএস/এএটি