সবার মন্তব্য, দেশের পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশনা না মেনে মাস্ক না পরে বাইরে এসে অবশ্যই তিন বৃদ্ধ অন্যায় করেছেন। কিন্তু গ্রামের খেঁটে খাওয়া বাবার বয়সী লোকদের জনসম্মুখে এভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে ছবি তুলবে একজন সরকারি কর্মকর্তা এটা হতে পারে না, কোন সভ্য দেশে একজন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা কোন মানসিকতায় এমনটি করলেন? তাদের তো জরিমানা কিংবা অন্যকোনো শাস্তি দেওয়া যেতো।
শুক্রবার (২৭ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে যশোরের মণিরামপুর উপজেলার চিনাঢোলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা গেছে, এক বৃদ্ধ ভ্যানচালক এবং আরও দুই বৃদ্ধকে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে সামনে ছবি তুলছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান।
স্থানীয়রা বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছিলেন। চিনাঢোলা বাজারে অভিযানের সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে পড়েন প্রথমে দুই বৃদ্ধ। এর মধ্যে একজন বাইসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অপরজন রাস্তার পাশে বসে কাঁচা তরকারি বিক্রি করছিলেন। তবে তাদের মুখে মাস্ক ছিল না। এ সময় পুলিশ ওই দুই বৃদ্ধকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করলে সাইয়েমা হাসান শাস্তি হিসেবে তাদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজেই তার মোবাইল ফোনে এ চিত্র ধারণ করেন। এ ছাড়া পরবর্তীতে অপর এক ভ্যানচলককে অনুরূপভাবে কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখেন। এ ছবি আশপাশের কেউ ধারণ করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়। এতে সর্বত্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এ ব্যাপারে মনিরামপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাইয়েমা হাসান সাংবাদিকদের কাছে ‘শাস্তি দেওয়ার’ সত্যতা স্বীকার করেন।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। তবে বয়স্কদের কান ধরিয়ে দাঁড় করিয়ে থাকলে অবশ্যই সেটা দুঃখজনক। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলেও জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০২০
ইউজি/ওএইচ/