ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

টাকার সঙ্গে করোনা নিচ্ছেন নাতো?

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
টাকার সঙ্গে করোনা নিচ্ছেন নাতো? ছবি প্রতীকী

ঢাকা: শরীরে করোনা ভাইরাস বহন করছেন এমন ব্যক্তির স্পর্শ করা টাকা থেকে সংক্রমণ ছড়াতে পারে। তাই টাকা লেনদেনের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পরিচিত-অপরিচিত লোকের সঙ্গে টাকা লেনদেনের পর হাত ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।  

টাকা থেকে দূরে থাকার মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। সকালে বাসা থেকে বের হতে গেলেই পকেটে টাকা নিয়ে বের হতে হয়।

গন্তব্যে পৌঁছার জন্য যে মাধ্যমই ব্যবহার করি না কেন টাকার নেলদেন করতে হয়। বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে গেলেও টাকা লেনদেন করতে হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, টাকা লেনদেনের সময় করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তাই টাকা লেনদেনের পর প্রথমেই দুই হাত ভালো করে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা বেশি টাকা লেনদেন করেন, বিশেষ করে ব্যাংক কর্মকর্তাদের মধ্যে যারা টাকা লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত তারা করোনা ভাইরাসের ঝুঁকির মধ্যে আছেন। পাশাপাশি এজেন্ট ব্যাংকিং ও বিকাশসহ‌যেসব প্রতিষ্ঠান টাকা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত তাদের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীরাও ঝুঁকিমুক্ত নন।

এ কারণে বিভিন্ন ব্যাংক ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানিয়েছে, করোনা সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে কীভাবে জনসমাগম এড়িয়ে আর্থিক লেনদেন করা যায়। পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যাংকের স্মার্ট অ্যাপ, এটিএম, ডেবিট কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা লেনদেনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, অনেকেই আমাদের ব্যাংকে সেবা নিতে আসেন। আমরা প্রথমেই গ্রাহকের হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে থাকি। দুই হাত ভালো মেসেজ করে ব্যাংকে প্রবেশ করেন। তারপরেও করোনা ভাইরাসের একটা আতঙ্ক থেকে যায়। কার মধ্যে এই জীবাণু আছে সেটা সঠিক কেউ জানে না।

তিনি বলেন, আমাদের কর্মকর্তারা গ্রাহক থেকে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করছেন। তবে যারা টাকা লেনদেনের কাজ করেন তারা একটু বেশি ঝুঁকিতে আছেন।

ইস্কাটন গার্ডেনের এক ব্যবসায়ী সবুজ মিয়া। বিকাশের এজেন্ট নিয়েছেন তিনি। তার মুদির দোকানও আছে। লেনদেনের বিষয়টা কমানোর জন্য তিনি ব্যবসার পরিধি কমিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ যাবত বিকাশ এবং ফ্লেক্সিলোডে ব্যবসা কমিয়ে দিয়েছি। পরিচিত মানুষ না এলে বিকাশে টাকা পাঠানো আর ফ্লেক্সিলোড করি না। দোকানে নতুন করে মালামাল আনা হয় না এই বলে কিছু মানুষকে বিদায় করে দিচ্ছি। টাকা লেনদেনের বিষয়টা একটু এড়িয়ে চলতে চেষ্টা করছি।

গণপরিবহনে এক্ষেত্রে একই টাকা বারবার হাত বদল হচ্ছে। এতে ঝুঁকির পরিমাণ অনেক বেশি। গণপরিবহনে চলাচল করেন এমন একজন আব্দুর রায়হান। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গণপরিবহনে চলাচলের সময় যতদূর সম্ভব ভাংতি রাখার চেষ্টা করি, যাতে যা ভাড়া তাই দিতে পারি, ফেরত না নিতে হয়। তবে সব জায়গাতে তো আর  হয় না। তাই টাকা লেনদেনে সাবধান হওয়ায়ই ভালো।

ভাইরোলজি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস স্কিনের মাধ্যমে ছড়ায় না। শুধু চোখ, নাক ও মুখ দিয়ে প্রবেশ করে। তাই যদি আক্রান্ত ব্যক্তি টাকা লেনদেনের আগে গণনার সময় মুখের লালা ব্যবহার করেন। পরে ওই টাকা যদি অন্য কেউ স্পর্শ করেন এবং হাত পরিষ্কার না করে নাক, মুখ, চোখে স্পর্শ করেন, তাহলে তিনি আক্রান্ত হতে পারেন।

এদিকে গত রোববার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব মো. জহিরুল হক ভূঁইয়া বলেছেন, প্রাণঘাতী করোন ভাইরাসের কারণে ক্রেতা কমে যাওয়া এবং শ্রমিক কর্মচারী মালিকদের সংক্রমণ এড়াতে ২৫ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ মার্চ পর্যন্ত সুপার মার্কেট ও সকল মার্কেটসমূহ বন্ধ থাকবে। এ সময় শুধু কাঁচাবাজার, মুদি দোকান, ওষুধের দোকান এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান খোলা থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
পিএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।