ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা: পোশাক কারখানা বন্ধ নিয়ে শ্রমিক নেতাদের ভাবনা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
করোনা: পোশাক কারখানা বন্ধ নিয়ে শ্রমিক নেতাদের ভাবনা

সাভার (ঢাকা): করোনা ভাইরাস বিশ্ববাসীসহ বাংলাদেশের মানুষের কাছে একটি আতঙ্কের নাম। এ ভাইরাসটির সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগম কমাতে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিনোদনকেন্দ্র, দোকান, সভা-সমাবেশে ও সব অনুষ্ঠান বন্ধসহ চারটি এলাকা লকডাউন করে রাখা হয়েছে।

তবে ৪০ লাখ মানুষের কর্মস্থল পোশাক কারখানাগুলো এখনও বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেননি সরকার। বারবার আলোচনায় বসার পরও কারখানা খোলা রাখার সিন্ধান্তই এসেছে।

এদিকে বাংলাদেশে করোনার (কোভিড-১৯) প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে তৈরি পোশাক কারখানা বন্ধ করা যায় কি না, তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলোতে। শিল্প অঞ্চল সাভার ও আশুলিয়ার স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছে বাংলানিউজ।

কিছু শ্রমিক নেতা বলছেন, পোশাক করাখানা বন্ধ না করলে বড় দুর্যোগ নেমে আসতে পারে। আবার কোনো শ্রমিক নেতা বলছেন, পোশাক কারখানা বন্ধ করা যাবে না। কারখানা বন্ধ করলে ভাইরাসটি আরও মহামারি আকার ধারণ করবে।
পোশাক কারখানা বন্ধের পক্ষে যারা মত দিয়েছেন তাদের মধ্যে গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক শ্রমিক নেতা খাইরুল ইসলাম মিন্টু বলেন, পোশাক কারখানা অবশ্যই বন্ধ করা জরুরি। যেখানে দেশের সব কিছু বন্ধ করে লকডাউন করে দেওয়া হয়েছে সেক্ষেত্র পোশাক শ্রমিকরা কোনো ভাবেই নিরাপদ নয়। শ্রমিকরা আরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে। সে জায়গাতে অবশ্যই শ্রমিকদের স্ব বেতনে আজ থেকেই ছুটি দেওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে আর একটু সময়ও দেরি করা উচিত না।

পোশাক কারখানা বন্ধ করে প্রতিরোধ ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করছেন শ্রমিক নেতা ইব্রাহীম। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, সরকার সব বিষয়ই ইতোমধ্যে বিবেচনা করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেহেতু শ্রমিকবান্ধব সেহেতু তিনি পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে যে সিন্ধান্ত নেবেন সেটাই ভালো হবে। এদিকে এখন যদি পোশাক কারখানাগুলো ছুটি ঘোষণা করা হয় তাহলে দেশ অর্থনীতির দিক থেকে পিছিয়ে যাবে। কিন্তু আবার অর্থনীতির চেয়ে মানুষের জীবন বড়। তাই শ্রমিকদের বাচঁতে হবে। একটি পোশাক কারখানায় অনেক শ্রমিক কাজ করে সেখানে যদি একবার করোনার সংক্রমণ হয় তাহলে বিষয়টি খারাপের দিকে চলে যাবে। তাই আমার মনে হয় বর্তমানে পোশাক কারখানা বন্ধ করে দেওয়াই উচিত।

এদিকে শ্রমিকদের জন্য কারখানাই এখন বেশি নিরাপদ বলে মনে করছেন স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি আল কামরান।  

তিনি বলেন, বর্তমানে শ্রমিক সংখ্যা ৪৫ লাখ, সরকার পোশাক কারখানা বন্ধ না করে চালু রাখার সিদ্ধান্তের ব্যাপার আমি একমত। ভাইরাসটি সংস্পর্শে ছড়ায় আর এই শ্রমিকরা যদি কারখানায় নিয়মিত যাওয়া আসা করে কারখানা ঢোকার সময় হাত ধুয়ে ঢোকে এবং পরবর্তীতে বাসায় গিয়েই আবার হাত ধুয়ে ফেলে তাহলে তার কিন্তু সংস্পর্শের সম্ভাবনা নাই। আর যদি কারখানা বন্ধ করতে হয় তাহলে অবশ্যই পুরো এলাকায় হোম কোয়ারেন্টিন করতে হবে। না হলে শ্রমিকরা একজন আরেক জনের বাড়িতে ঘুরবে। তখন অনেকের সংস্পর্শে আসবে ও করোনার সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড শিল্প শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি রফিকুল ইসলাম সুজন বাংলানিউজকে বলেন, বাস্তবে শ্রমিকরা অনেক আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তাই শ্রমিকদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করে স্ব বেতনে ছুটি দেওয়া হোক। এবং সব শ্রমিককে নিজ নিজ বাসায় থাকতে বলা হোক।

এদিকে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভা প্রধান তাসলিমা আক্তার গত ২০ মার্চ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে পোশাক কারখানার শ্রমিকের জীবন এবং শিল্পখাত রক্ষায় সব পোশাক কারখানা সাময়িকভাবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করার দাবি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, মার্চ ২৫, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।