ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

বেশি দামে পণ্য বিক্রি করায় ১৮ ব্যবসায়ীর জরিমানা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৩ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২০
বেশি দামে পণ্য বিক্রি করায় ১৮ ব্যবসায়ীর জরিমানা

ভোলা: করোনা ভাইরাসের প্রভাবে ভোলার বাজারে হঠাৎ করেই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বাজার মনিটরিংয়ে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রির অভিযোগে ১৮ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৩ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ টাকা জরিমানা আদায় করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার (২০ মার্চ) জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এছাড়াও হোম কোয়ারেন্টিনে না থাকায় ৭ প্রবাসীকে ৮২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

গত ২ দিনে তাদের এ জরিমানা করা হয়।

জানা যায়, ১ মার্চ থেকে এ পর্যন্ত জেলার সাত উপজেলায় ১৪৩০ জন বিদেশ থেকে এসেছে। এদের মধ্যে হোম কায়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ১৮২ জনকে। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে ভোলা। তবে প্রশাসন বলছে, প্রবাসীদের মধ্যে কারো কারো ১৪ দিন শেষ হয়ে গেছে, বাকিদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। অন্যদের খুঁজে বের করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

এ ব্যাপারে ভোলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও করোনা রেসপনস কমিটির সদস্য মো. আতাহার রহমান বলেন, বিদেশফেরত প্রবাসীদের জন্য প্রত্যেক উপজেলায় একটি করে ভবন প্রস্তুত করছে স্থানীয় প্রশাসন। এছাড়াও উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির মাধ্যমে সতর্ককতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিদেশফেরত ব্যক্তিদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখতে কাজ করছে প্রশাসন। যারা নির্দেশ মানছে না তাদের জরিমানা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৭ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৫৪ জনসহ ১৮০ জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। যাদের মধ্যে সদরে ৩৩ জন, দৌলতখানে ১৮, বোরহানউদ্দিনে ১৮, লালমোহনে ৩৩, চরফ্যাশনে ১১, তজুমদ্দিনে ৪৫ ও মনপুরা উপজেলায় ২৩ জন রয়েছে।

ভোলার সিভিল সার্জন ডা. রতন কুমার ঢালী বলেন, হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা ব্যক্তিরা সবাই বিদেশফেরত। তাদের সবাইকে ১৪ দিনের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছি। ‘করোনা ভাইরাস’ প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছে ভোলার স্বাস্থ্যবিভাগ। ইতোমধ্যে জেলা সদর হাসপাতালসহ প্রত্যেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে করোনা ওয়ার্ড (আইসোলেশন) প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গঠন করা হয়েছে ৮টি মেডিক্যাল টিম।  

এছাড়াও ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। পুরো জেলার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা ব্যক্তিদের মধ্যে ওমান, ইতালি, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, ইন্ডিয়া, মালয়েশিয়া, আবুধাবি থেকে আগত ব্যক্তির সংখ্যাই বেশি বলে নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

এদিকে মরণঘাতী ‘করোনা ভাইরাস’ সংক্রমণ এড়াতে ভোলায় সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। ইতোমধ্যে বাইরের জেলার বাসিন্দাদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এছাড়াও হোটেলে রাত্রী যাপন, সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও জনসমাগম বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পর্যটন এলাকায় যেতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ভোলার জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম ছিদ্দিক বলেন, নৌপথে যাতে অন্য জেলার মানুষ ভোলায় প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিষয়টির প্রতি নজরদারি রাখতে বিআইডব্লিটিএ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। বিদেশ থেকে কোনো ব্যক্তির আসার খবর পাওয়া মাত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।  

ভোলা বিআইডব্লিটিএ উপ-পরিচালক মো. কামরুজ্জামান বলেন, ঢাকা সদর ঘাট থেকেই চেকপোস্ট বসানো হয়েছে, অন্য জেলার মানুষ যাতে ভোলাতে প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। এছাড়াও লঞ্চ মালিকদের নিজস্ব উদ্যোগে যাত্রীদের সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।