ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ফ্রান্স থেকে ফিরেই বিয়ে, কোয়ারেন্টাইনে বর-কনেসহ বাড়ির সবাই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
ফ্রান্স থেকে ফিরেই বিয়ে, কোয়ারেন্টাইনে বর-কনেসহ বাড়ির সবাই

হবিগঞ্জ: বিশ্বব্যাপী বিপর্যয় সৃষ্টি করা করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেই ফ্রান্স থেকে ফিরে হোম কোয়ারেন্টাইনে না থেকে বিয়ে করে বসেছেন হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার করাব গ্রামের মাসুক মিয়া। অথচ, ফ্রান্সেও করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ভয়াবহ। দেশটিতে এ পর্যন্ত কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৬৩৩ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ১৪৮ জনের।

অবশ্য শেষপর্যন্ত বিপাকে পড়েছেন ওই যুবক। প্রশাসন বিয়ের খবর জানতে পেরে তার ওয়ালিমা অনুষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে।

একইসঙ্গে বর-কনেসহ উভয় পরিবারের সবাইকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। অন্যথায় তাদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।

লাখাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্চিতা কর্মকার বাংলানিউজকে বলেন, করাব গ্রামের আলাই মিয়ার ছেলে মাসুক মিয়া গত ১১ মার্চ ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরেন। ২৬ তারিখ পর্যন্ত তার বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকার কথা। কিন্তু তিনি সোমবার (১৬ মার্চ) বিয়ে করে ফেলেন একই উপজেলার জিরুন্ডা গ্রামে।

তিনি বলেন, সোমবার বিয়ের অনুষ্ঠান হয় হবিগঞ্জ শহরে। এরপর মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) মাসুক মিয়ার বাড়িতে তাদের ওয়ালিমা অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সোমবার রাতেই উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারে। এরপর মঙ্গলবার সকালে করাব গ্রামে গিয়ে স্ত্রীসহ মাসুক মিয়ার বাড়ির সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিই। এমনকি নির্দেশ না মানলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানাই। একইসঙ্গে ওয়ালিমা অনুষ্ঠানও বাতিল করি।

ইউএনও বলেন, মাসুক মিয়া ও তার পরিবারের লোকজন সঠিকভাবে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকছেন কি-না, তা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

লাখাই উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি। মাসুক মিয়া লাখাই উপজেলার জিরুন্ডা গ্রামে বিয়ে করলেও অনুষ্ঠান হয়েছিল হবিগঞ্জ শহরে। অনেকেই উপস্থিত ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে।

এদিকে, বাহুবল উপজেলার নিজ তাকিয়া গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে আব্দুল মুমিন নামে এক দুবাই প্রবাসী গত ১৪ মার্চ দেশে ফেরার পর বিভিন্ন গ্রামে ও বাজারে ঘুরাফেরা শুরু করেন। পরে সোমবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্নিগ্ধা তালুকদারের নির্দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে গঠিত টিম তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি সম্পর্কে তাকে অবগত করে। এসময় ২৮ মার্চ পর্যন্ত তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) অমিতাভ পরাগ তালুকদার বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

হবিগঞ্জের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জল বাংলানিউজকে বলেন, হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় সোমবার আমেরিকা ফেরত দুই প্রবাসী এবং এর আগে চুনারুঘাট উপজেলায় দুই দুবাই প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।