ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

করোনা সতর্কতা-সচেতনতায় কাজ করছে ডিএনসিসি

শাওন সোলায়মান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
করোনা সতর্কতা-সচেতনতায় কাজ করছে ডিএনসিসি শিশুকে হাত ধোয়া শেখাছেন ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলামসহ অন্যরা। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বিশ্বব্যাপী মহামারী আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় নাগরিকদের সতর্ক করতে এবং তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি)। সরাসরি দায়িত্বের মধ্যে না পড়লেও এবং সক্ষমতার সীমাবদ্ধতা থাকলেও করোনা মোকাবিলায় কাজ করে যাচ্ছে বলে দাবি সংস্থাটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের।

ডিএনসিসির বিভিন্ন বিভাগ বিশেষ করে স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা ইস্যুতে নাগরিকদের সচেতন করতে সংস্থাটির বিভিন্ন এনজিওগুলো থেকে সাহায্য নিচ্ছে। করোনার মতো গুরুতর রোগ মোকাবিলা ও এর চিকিৎসায় নিজস্ব লোকবল নেই ডিএনসিসির।

তবে এনজিও কর্মীদের দিয়ে কমিউনিটিতে সচেতনতা বাড়াতে এবং নাগরিকদের মধ্যে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে সংস্থাটি।

ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যবিভাগে স্বাস্থ্যকর্মী তো সেভাবে নেই। আছে মশককর্মী। তাদের দিয়ে তো করোনা ইস্যুতে কাজ করানো যাবে না। সামনে এডিস মশার মৌসুমও আসছে। এজন্য আমরা আমাদের বিভিন্ন এনজিও সহযোগীদের সাহায্য নিচ্ছি। তাদের কর্মীদের মাধ্যমে আমরা কমিউনিটিতে করোনা সংক্রান্ত বার্তা পৌঁছে দিচ্ছি। বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। ডেঙ্গুর পাশাপাশি এবং এখন হাম রুবেলা টিকাদান কর্মসূচি নিয়ে কাজ করছি আমরা। এই সময়ে করোনা নিয়েও জনসচেতনতা তৈরিতে অ্যাডভোকেসি করছি আমরা। প্রতিটা অ্যাডভোকেসি সভাতেই এই বিষয়ে কথা হচ্ছে। একইসঙ্গে আমাদের যে পাঁচটি মাতৃসদন আছে সেখানে কেউ আসলেই প্রবেশের আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে তাদের হাত ধোয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।

তবে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটকে (আইইডিসিআর) প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হচ্ছে বলেও জানান জেনারেল মামুন।

তিনি বলেন, আমরা সরাসরি চিকিৎসা করছি না। তবে চিকিৎসায় ‘গাইডেন্স’ করছি। আইইডিসিআর যাদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখেছে আমরা তাদের তথ্য এনে সেগুলো মনিটরিং করছি। তারা কতটা সফলভাবে কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ড পার করছেন সেটি দেখছি। কোথাও অসঙ্গতি দেখলে সেগুলো রিকভার করতে চেষ্টা করছি। আবার তাদের খোঁজ-খবরও রাখছি।

ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, হাম রুবেলা টিকাদান এবং করোনা ইস্যুতে ডিএসসিসির সব পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী অতিরিক্ত সময় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান সংস্থাটির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

এদিকে করোনা সচেতনায় ডিএনসিসি এলাকার ২৫টি স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করেছে ডিএনসিসি।

মঙ্গলবার (১৭ মার্চ) রাজধানীর গুলশান-২ নম্বর ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে থেকে এই হাত ধোয়ার ব্যবস্থার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

ডিএনসিসির নির্বাচিত মেয়র আতিকুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় তার সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র জামাল মোস্তফা, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মফিজুর রহমান, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল হাই, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোমিনুর রহমান মামুন, প্রধান বর্জ্য কর্মকর্তা কমডোর মঞ্জুর আহমেদসহ অন্যান্যরা।

২৫টি স্থান হচ্ছে উত্তরায় রবীন্দ্র সরণি (বঙ্গবন্ধু মুক্ত মঞ্চ), রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে, মাসকট প্লাজার সামনে, খিলক্ষেত বাসস্ট্যান্ড, প্রগতি সরণি এলাকা, মিরপুরে সনি সিনেমা হলের সামনে, গ্রামীণ ব্যাংকের বিপরীত দিকে ডিএনসিসি আঞ্চলিক কার্যালয়ের সামনে, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে ফায়ার সার্ভিসের সামনে, মিরপুর ১২ নম্বর বাসস্ট্যান্ড, মিরপুর ১৪ নম্বর মার্ক মেডিক্যালের সামনে, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে শাহ আলী মার্কেটের কোনায়, মিরপুর শপিংমলের নিচে (মিরপুর সরকারি কলেজের বিপরীতে), মিরপুর ১ নম্বর কো-অপারেটিভ মার্কেটের সামনে, গাবতলী পশু হাট, শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড, ফার্মগেট আনন্দ সিনেমা হলের সামনে, মোহাম্মদপুর টাউন হলের সামনে, মোহাম্মদপুর বসিলা রোডের নতুন রাস্তার কালভার্টের উপর, কারওয়ানবাজার (কিচেন মার্কেটের সামনে), আগারগাঁও পঙ্গু হাসপাতালের সামনে, গুলশান-২ ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে, গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে, কাকলী বাস স্ট্যান্ড, মহাখালী ডিএনসিসি আঞ্চলিক অফিসের সামনে এবং রামপুরা বাজার। পর্যায়ক্রমে ডিএনসিসির অন্যান্য জনসমাগমস্থলেও হাত ধোয়ার এ কর্মসূচি সম্প্রসারণ করা হবে।

কর্মসূচির উদ্বোধনকালে আতিকুল ইসলাম বলেন, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। সচেতনতার প্রথম শর্ত হচ্ছে হাত ধোয়া। মূলত পথচারীদের সচেতন করে তুলতেই হাত ধোয়ার এ কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। পথচারী, বাসযাত্রী এবং পথচারীরা এসব স্থানে হাত ধুতে পারবেন। এজন্য সাবান ও পানি ডিএনসিসি থেকে সরবরাহ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রয়োজন হলে মহাখালীতে ডিএনসিসির নতুন মার্কেটটি ব্যবহার করা যেতে পারে। হাত ধোয়া কর্মসূচি উদ্বোধনের পরে বর্জ্য পরিবহনের জন্য ডিএনসিসির নতুন কেনা ২০টি ট্রাকের চাবি চালকদের হস্তান্তর করা হয়। এসব ট্রাক ২০টি ওয়ার্ডে বর্জ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০২০
এসএইচএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।