বুধবার (১১ মার্চ) রূপনগরের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গেছে আসমার ছোট্ট সংসারের সব উপকরণ। স্বামী সাইদুল ও কন্যা সন্তানসহ তিনজনের ছোট্ট একটি স্বপ্নের নীড় ছিল এটি।
প্রতিদিনের মতো বুধবারও সংসারের কাজে ব্যস্ত ছিলেন আসমা। আগুন লাগার খবর পেয়ে ছোট্ট সন্তানকে বুকে জড়িয়ে এক কাপড়ে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রাণে বাঁচলেন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ঘরের আর কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। আগুনে হারিয়েছেন মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুসহ সংসারের যাবতীয় উপকরণ।
অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে এখন পর্যন্ত শুধু শুকনো রুটি ও কলা খেয়েই পেটের ক্ষুধা মিটিয়েছিলেন তারা। বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) ধ্বংসস্তূপে নিজেদের বসবাসের স্থানে পড়ে থাকা তিনটি ইট ও কুড়িয়ে নেওয়া লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দুপুরের খাবার রান্না করেছেন আসমা।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া বস্তির বাসিন্দা অপর নারী আসিয়া (৩৭) বাংলানিউজকে বলেন, দু’সন্তান নিয়ে কোনোভাবে দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে ছিলাম। দিনশেষে বস্তির এই ঘরটিতে ঘুমাতাম সন্তানদের নিয়ে। আর সর্বনাশা আগুন মাথা গোঁজার সেই ঘরটিও কেড়ে নিল!
আসিয়া জানান, ১০ বছর আগে তাকে ফেলে চলে যান তার স্বামী। এরপর দু’সন্তানসহ জীবন ধারণে বাসাবাড়িতে কাজ করেছেন তিনি। পরে আত্মীয়-স্বজন ও পরিচিত-অপরিচিতজনের কাছে হাত পাতাসহ বিভিন্নভাবে টাকা জমিয়ে বস্তিতে টিনের ছোট ঘর তোলেন।
গতবছর গার্মেন্টসে হেলপার হিসেবে কাজে যোগ দেওয়ার কথা জানান আসিয়া।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আসিয়া জানান, প্রতিদিনের মতো বুধবারও জীবিকার জন্য সন্তানদের রেখে গার্মেন্টসে গিয়েছিলেন তিনি। খবর পেয়ে বাসায় ফিরে দেখেন তার সন্তানেরা মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে অগ্নিকাণ্ড দেখছে।
এর আগে, বুধবার (১১ মার্চ) সকালে রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর এলাকার 'বারেকের বস্তিতে' অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পুড়ে ছাই হয়ে গেছে পাঁচশ’র বেশি ঘর। ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৪ ঘণ্টা, মার্চ ১২, ২০২০
এমএমআই/এবি