ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জাতীয়

গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি নির্বাচন: আইনমন্ত্রী

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২০
গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি নির্বাচন: আইনমন্ত্রী

ঢাকা: আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি নির্বাচন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের মতে, ‘নির্বাচন গণতন্ত্রের প্রাণভোমরা’। নির্বাচন ছাড়া দেশে গণতন্ত্র হয় না। আবার গণতন্ত্র ছাড়া নির্বাচনও অর্থহীন।

সোমবার (০২ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় ভোটার দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র সৃষ্টির আশায় দেশে দেশে নির্বাচন চর্চা অব্যাহত রয়েছে।

এ দিকেও আমরা এগিয়ে। নতুন স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ হিসেবে ১৯৭৩ সালে অবাধ ও নিরপেক্ষ সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে ১৯৭৫ সালের পর দীর্ঘ সময় দেশে নির্বাচন চর্চার পথ ছিল অত্যন্ত অমসৃণ। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, নির্বাচন চর্চার পথ মসৃণ করতে এ সময় কত আন্দোলন-সংগ্রাম করতে হয়েছে, এর প্রত্যক্ষদর্শী আপনারা অনেকেই।

|আইনমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সরকারের আমলাদের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা। তার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য গণতন্ত্রকে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি এবং নির্বাচনকে গণতন্ত্রের অন্যতম মৌলিক ভিত্তি হিসেবে দাঁড় করানোর পাশাপাশি প্রশাসনের সব পর্যায়ের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের কার্যক্রম নিশ্চিত করার বিধান করা হয়।

তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন যে ভোটার তালিকা প্রণয়ন করেছে, তার বিশ্বস্ততা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে একটি আস্থা তৈরি হয়েছে। এ আস্থার কারণে বর্তমানে বিভিন্ন অফিস-আদালতে ব্যক্তির পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন কমিশনের ডেটাবেজ এবং ডিজিটাল প্রযুক্তি নির্ভর জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এটি ব্যবহার করছে।

আনিসুল হক বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হবে নির্ভুল ভোটার তালিকার ধারা অব্যাহত রেখে আগামীতে এ আস্থা ধরে রাখা। যাতে কোনো অবস্থাতেই এক ব্যক্তি দুই জায়গায় ভোটার না হতে পারে। রোহিঙ্গা বা অন্যকোনো দেশের নাগরিক যেন অবৈধভাবে ভোটার হতে না পারে। এ বিষয়ে কমিশনকে অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে। প্রয়োজনে এসব অপরাধে কঠোর শাস্তির বিধি-বিধান করতে হবে। এ বিষয়ে সরকারের সব ধরনের সহযোগিতা পাবে।

মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশনের আরেকটি কর্মযজ্ঞ নির্বাচন আধুনিকায়নে প্রযুক্তির ব্যবহারসহ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন প্রবর্তন। এই কর্মযজ্ঞ গ্রহণ করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে আমি সাধুবাদ জানাই। বর্তমান যুগ প্রযুক্তির। প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বের অনেক দেশ উন্নয়নের শিখরে পৌঁছে গেছে। এখন প্রযুক্তি বাদ দিয়ে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন করা দুরূহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নেতিবাচক ধারণা ও অজ্ঞতার কারণে প্রযুক্তি গ্রহণ না করলে আমাদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়তে হবে। উন্নয়নের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। এর অন্যতম উদাহরণ- পরপর দুইবার বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবলের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও তৎকালীন বিএনপি সরকারের অজ্ঞতার কারণে সেই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়েছিল। পরবর্তীকালে এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে প্রায় এক যুগ অপেক্ষা করতে হয়েছে। ফলে বাংলাদেশকে দীর্ঘদিন আধুনিক প্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থা থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছে।

'এর প্রভাব আমরা সবাই উপলব্ধি করেছি। আমরা এ রকম ভুল আর করতে চাই না। যে প্রযুক্তি দ্বারা দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে, তা অবশ্যই গ্রহণ করা হবে। '

ইভিএম ভোটগ্রহণ ব্যবস্থা নিয়ে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল, কাজাকিস্তান, রাশিয়া, ফ্রান্স, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, পেরু, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশ ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ চালু করলেও বাংলাদেশের কেউ কেউ ইভিএম এর বিষয়ে না জেনে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করেছে। বাস্তবতা হলো ১৯৭৫ সালের পর বাংলাদেশের ভোটগ্রহণে যে অপসংস্কৃতি চালু হয়েছিল, তা সম্পূর্ণ দূর করতে হলে নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের বিকল্প নেই। ইভিএম পদ্ধতি এই অপসংস্কৃতি দূর করতে মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে আমার বিশ্বাস।

নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. আলমগীরের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নূরুল হুদা, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২০
এমএমআই/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।