ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাতে রাজধানীর অন্ধকার সড়কেই বেশি ছিনতাই

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
রাতে রাজধানীর অন্ধকার সড়কেই বেশি ছিনতাই

ঢাকা: রাতে রাজধানীর যেসব সড়কে পর্যাপ্ত আলো নেই সাধারণত সেসব সড়কেই ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটছে। সেসব সড়কে সংশ্লিষ্টদের নজরদারির পাশাপাশি নগরবাসীকে সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছেন মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন।

রাজধানীজুড়ে ছিনতাই কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে টার্মিনাল এবং চিহ্নিত পয়েন্টগুলোতে তৎপরতা জোরদারের সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে বলেও জানান তিনি।

সম্প্রতি রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) থেকে শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় একযোগে অভিযান চালিয়ে ৪২ জন ছিনতাইকারীকে আটক করেছে ডিবি।

এসময় তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা ৭৪টি মোবাইল ফোন, একটি ট্যাব, দুটি ল্যাপটপ, ১৩টি ছুরি, দুটি চাপাতি উদ্ধার করা হয়েছে।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান আব্দুল বাতেন।

তিনি বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো নেই। সেখানে যেসব ল্যাম্পপোস্ট আছে সেগুলো বেশির ভাগই নষ্ট। ফলে সড়কগুলো অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকায় ওসব এলাকায় ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।

সেসব সড়কে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করতে দায়িত্বশীলদের নজর দেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে নগরবাসীকেও ওইসব এলাকা দিয়ে চলাচলের সময় সতকর্তা অবলম্বন করতে হবে।

তিনি বলেন, ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় এনে পূর্ণাঙ্গ সাজার ব্যবস্থা না করা হলে অপরাধ কমানো সম্ভব হবে না। বেশির ভাগ সময় বাস-লঞ্চ টার্মিনাল এবং অন্ধকার গলিতে ছিনতাই হয়ে থাকে। আর সেটা গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত।

পুলিশের পক্ষে গৃহীত পদক্ষেপের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল বাতেন বলেন, যে সময় গুলোতে এ ধরনের কর্মকাণ্ড ঘটে তা বন্ধ করতে আমরা বাস-লঞ্চ টার্মিনালগুলোতে প্রেটোকল জোরদার করবো, একইসঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারিও বাড়ানো হবে। বিশেষ করে ওইসব এলাকায় চিহ্নিত ছিনতাইকারীদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মোবাইল ফোন মেরামত দোকানের তালিকা তৈরির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বড় শপিংমলসহ ছোট খাটো মোবাইল পার্সের দোকানগুলো এসব চোরাই মোবাইল কিনে থাকে। ছিনতাইকারীরা সাধারণত এসব মোবাইল সরাসরি মানুষের কাছে বিক্রি করে না। বিশেষ করে কারও মোবাইল নষ্ট হয়ে গেলে চোরাই মোবাইলের পার্স খুলে বিক্রি করা হয়।

এসব মোবাইলের পার্স বিক্রি করলে যে লাভ হয়, মোবাইল বিক্রি করলেও তা হয় না। চোরাই মোবাইলের বিক্রি ও কেনার সঙ্গে কারা জড়িত তাদেরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। শিগগিরই সেসব জায়গায় অভিযান চালানো হবে। তাই বড় বড় মার্কেটসহ মোবাইল পার্স ব্যবসায়ীদের এ ধরনের অপরাধে জড়িত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শনিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) ভোরে কমলাপুরে রেলওয়ে স্টেশনের কাছে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় রিকশা থেকে পরে তারিনা বেগম নামে একজনের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করছি। এই ব্যাপারে মামলা হবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।

ছিনতাইয়ের ঘটনায় নগরবাসী মামলা করতে নিরুৎসাহিত হওয়ার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে পুলিশের দায় বললে হবে না, এটা দায়িত্বশিলতা। নাগরিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব কোথাও কোনো অপরাধ হলে তা থানায় গিয়ে অভিযোগ দেওয়া। তাছাড়া পুলিশের পক্ষে অপরাধ সম্পর্কে জানা কিংবা অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। নগরবাসীকে বলতে চাই, আপনারা থানায় যাবেন অভিযোগ দেবেন। থানা যদি মামলা বা অভিযোগ নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে আমাদের ঊর্ধ্বতনদের জানাবেন, আমরা ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৯, ২০২০
পিএম/এমএমআই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।