ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

না’গঞ্জে বেড়েছে মশার উপদ্রব, নেই ডেঙ্গুর আগাম প্রস্তুতি

মাহফুজুর রহমান পারভেজ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২০
না’গঞ্জে বেড়েছে মশার উপদ্রব, নেই ডেঙ্গুর আগাম প্রস্তুতি মশা

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) এলাকায় ব্যাপকভাবে বেড়েছে মশার উপদ্রব। ঘরে ও বাইরে কিংবা কর্মস্থলে কোথাও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না মশার কামড় থেকে। আর তাই সামনে বর্ষাকালকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গুর আগাম প্রস্তুতি নিয়ে নগরবাসী চিন্তিত থাকলেও এতে তেমন মাথাব্যথা নেই নাসিকের।

সম্প্রতি শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা এই নিয়ে করছেন ব্যাপক সমালোচনা। শুধু বসতঘর বাড়ি অফিস-আদালত নয় মশার উপদ্রব থেকে চলতি পথেও রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না।

এর মধ্যে ডেঙ্গুর উপদ্রব শুরু হলে সেটি ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করবে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে শহরে বৃদ্ধি পাওয়া মশার উপদ্রবের পরও নাসিকের কোনো ব্যবস্থা না থাকার পাশাপাশি সামনের বৃষ্টির দিনকে কেন্দ্র করে ডেঙ্গুর আগাম কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।

শহরের রিকশাচালক করিম মুন্সী বলেন, আগে তো রাস্তায় বসলে কিংবা বাসায় মশা কামড়াতো কিন্তু, এখন তো রিকশা চালানো অবস্থায়ও মশা কামড়ায়। মশার জন্য কোথায় একটু শান্তিতে বসতে পারি না।

শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শেহজাদ বলেন, মশার যন্ত্রনায় একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। দিনে কিংবা রাতে মশার জন্য কোথাও বসতে কিংবা শুতে পারছি না। ঘরে-বাইরে মশার ব্যাপক বিস্তর ঘটেছে। দ্রুত এ মশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সামনে নাসিককে বিপদের সম্মুখীন হতে হবে।

নাসিকের এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ বলেন, মশার বিস্তর রোধে চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে মশক নিধনে কাজ করবো। ইতোমধ্যে ওষুধ দেওয়া শুরু হয়েছে, সেগুলো ছিটানো হবে। আমাদের কাজের পাশাপাশি আমরা নগরবাসীকে আহ্বান করি, যেন তারা সচেতনভাবে বাড়িঘর ছাদ আঙ্গিনা এসব পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে। মসজিদের ইমামদের এ ব্যাপারে আহ্বান রাখতে অনুরোধ করি এবং এলাকাবাসীসহ সকলকে নিয়েই ডেঙ্গু মোকাবিলায় আমরা আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করবো।  

নাসিকের স্বাস্থ্য বিষয়ক কর্মকর্তা মেডিক্যাল অফিসার ডা. শেখ মোস্তফা আলী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনায় আছি, কাজ চলছে। আমি তো ট্রেনিংয়ে এখন শহরের বাইরে আছি, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা সিভিল সার্জল ডা. ইমতিয়াজ জানান, এটি সঠিক এবং সবাই মশার জন্য ভুক্তভোগী। আমরা চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রস্তুত আর আমাদের কাজ চিকিৎসা দেওয়া। মশা মারার ব্যাপারটি নাসিকের কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের। তারা যদি ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমাদের মশার ব্যাপারে কিছু করার নেই।

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মো. আবুল আমিন বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে এবং আমরা আমাদের নাসিকের এবারের বাজেটে একটি বিশাল অংশ রেখেছি এই ডেঙ্গু মোকাবিলায় ও মশা নিয়ন্ত্রণের জন্য। ইতোমধ্যে প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫ জন করে কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে যারা নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে এবং আমি প্রতিদিন সকালে অফিসে এসেই তিনটি ওয়ার্ডে ফোন দিয়ে খোঁজ নেই। পাঁচজন কর্মী সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা। লার্ভা ধ্বংস করতে পারলে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। সেটি করতেও আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমরা আমাদের কাজের উপর আরও বেশি গুরুত্ব দেবো এবং আশা করছি খুব দ্রুততম সময়ে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২০
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।