ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশকে করোনা ভাইরাস শনাক্তে ৫০০ কিটস দিল চীন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
বাংলাদেশকে করোনা ভাইরাস শনাক্তে ৫০০ কিটস দিল চীন

ঢাকা: প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস শনাক্তে বাংলাদেশকে ৫০০ কিটস দিয়েছে চীন। 

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের কাছে চাইনিজ অ্যাম্বাসাডর এসব কিটস হস্তান্তর করেন। এসময় স্বাস্থ্য সচিব আসাদুল ইসলাম, চায়নার রাষ্ট্রদূত ঝি জি মংসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাস শনাক্তে বাংলাদেশেও ২ হাজার কিটস রয়েছে। সব মিলিয়ে এখন আমাদের আড়াই হাজার কিটস হলো। কিটসের কোনো অভাব হবে না। পাইপলাইনে আরও আছে। আমরা এ ভাইরাস ঠেকানোর প্রস্তুতি নিয়েছি। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য ঢাকা-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। যদি দেশে এ ধরনের রোগী পাওয়া যায় তাহলে সেখানে সার্বক্ষনিক চিকিৎসা দেওয়া যাবে।  

‘করোনা ভাইরাস নিয়ে সারা বিশ্ব আতঙ্কে রয়েছে। এ পর্যন্ত ২৩টি দেশে করোনা ভাইরাস পাওয়া গেছে। প্রায় ৮০ হাজার রোগী রয়েছে। আর চায়নাসহ অন্যান্য দেশে মৃত্যু বরণ করেছে ২ হাজার ৬১৮ জন। আমাদের দেশে এ পর্যন্ত ৩ লাখের মতো লোককে পরীক্ষা করেছি। যারা আমাদের বিভিন্ন নৌবন্দর, স্থলবন্দর দিয়ে দেশে প্রবেশ করেছে তাদের সবাইকে পরীক্ষা করা হয়েছে। আমাদের দেশের জন্য সুখবর হলো, এখন পর্যন্ত কোনো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়নি। আমরা সব ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। আমাদের পরীক্ষা ও চিকিৎসা দেওয়ার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে। এর থেকেও ভালো খবর হলো, চায়নাতেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তবে মৃত্যুর সংখ্যা এখনও বেড়ে চলেছে। তবে দুঃসংবাদ হলো, ইরান, ইরাকসহ মধ্যপ্রাচ্য ও কিছু দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ’

জাহিদ মালেক বলেন, কীটসের পাশাপাশি আজ চায়না একটি ট্রিটমেন্ট প্রটোকলও দিয়েছে। বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে তারা এটা তৈরি করেছে। আমরা এটা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দ্বায়িত্বরত চিকিৎসকদের কাছে পৌঁছে দেবো। বাংলাদেশে যদি কোনো সময় এ ধরনের ভাইরাসে আক্রান্ত হয় তখন তারা এই প্রটোকল অনুসরণ করে সেবা দিতে পারবে।  

একটি টেস্টিং কিটস দিয়ে কতোজনকে পরীক্ষা করা যায় এবং এ পর্যন্ত কিটসের মাধ্যমে দেশে কতো জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, একটি কিটস দিয়ে একজনকেই পরীক্ষা করা যায়। দেশে এ পর্যন্ত কিটস দিয়ে ৭৯ জনকে পরীক্ষা করা হয়েছে। আমাদের ২ হাজার কিটস হলো। এখনকার জন্য এটা  যথেষ্ঠ।

মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে করোনা রোগী পাওয়া যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের গবেষণা ও প্রস্তুতি কেমন জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে কীভাবে করোনা ছড়ালো সেটাতো বলা যাচ্ছে না। তবে করোনা একজনের মাধ্যমে অন্যজনে ছড়ায়। নিশ্চয়ই তাদের ওখানে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেছে, কিন্তু তারা জানে না। তারা আস্তে আস্তে বের করে ফেলবে। আর আমাদের দেশে যথেষ্ঠ প্রস্তুতি আছে। আমাদের প্রতিটি বিমান, নৌবন্দর ও স্থলবন্দরে ডাক্তারদের টিমসহ স্ক্যানিং মেশিন, জ্বর মাপার যন্ত্র আছে। একই সঙ্গে প্রাথমিক কোয়ারেনটাইন করারও ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া আমাদের সব জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ডিসি এসপিসহ প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের এমন ব্যবস্থা আছে যাতে দেশে কোথাও এধরনের রোগী দেখা দিলে সাথে সাথে আমরা খবর পেয়ে যাই।  

মধ্যপ্রাচ্যে করোনা ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষাপটে ওই অঞ্চলে বিমান ফ্লাইট বাতিলের কোনো চিন্তাভাবনা আছে কিনা জানতে চাইলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এ মুহূর্তে ইরানসহ মধ্যপ্রাচ্যে বিমান ফ্লাইট বাতিলের কোনো পরিকল্পনা নেই। আমরা সচেতন করেছি সবাইকে। ইতোমধ্যে সব দেশেই ফ্লাইটের সংখ্যা কমে গেছে। লোকজন চলাফেরা কমিয়ে দিয়েছে। এতে করে পর্যটন শিল্প সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর অর্থ হলো লোকজন নিজেরাই চলাচল কমিয়ে দিয়েছে। কাজে ফ্লাইট বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০
জিসিজি/এইচজে/আরকেআর 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।