ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাভাষাকে ভালোবেসে বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছেন দুই জাপানি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
বাংলাভাষাকে ভালোবেসে বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছেন দুই জাপানি

ঢাকা: জাপানে জন্ম, সেখানেই বেড়ে ওঠা। তবে বাংলাদেশে এসে পড়েছেন বাংলাভাষার প্রেমে। শুধু প্রেমেই পড়েননি, বাংলাভাষাকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছেন দুই জাপানি নাগরিক। চলতি বছর জাপানে অনুষ্ঠিত অলিম্পিকে বাংলাদেশি অ্যাথলেটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে গেয়েছেন গানও।

শুনশুকে মিজোতোনে এবং মায়ের ওয়াতানবে এ দুই জাপানি নাগরিক প্রথম ২০০৯ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) কাজ নিয়ে বাংলাদেশে আসেন। সেবারই বাংলাভাষা, বাংলার গ্রাম, সংস্কৃতি এবং সাধারণ মানুষের প্রেমে পড়ে যান তারা।

২০১২ সালে ফের আসেন আর সেই থেকে থিতু হন এখানেই।

বাংলাভাষাকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে গড়েছেন ‘বাজনা বিট’ নামের একটি ব্র্যান্ড। বাংলাদেশের ‘ব’ আর জাপানের ‘জ’ দিয়ে এ নামকরণ করা হয়েছে বলে জানান শুনশুকে এবং মায়ের।

সম্প্রতি দ্য ইয়ং ফেলো নামের একটি বাংলাদেশি ইউটিউব চ্যানেলে এ দুই জাপানির এক সাক্ষাতকার প্রকাশিত হলে অনলাইন পাড়ায় বেশ আলোচিত হয়ে ওঠেন তারা। বেশ সাবলীল বাংলায় সেখানে নিজেদের অনুভূতি জানিয়ে মায়ের ওয়াতানবে বলেন, ২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসি। এরপর ২০১২ সালে। সেই যে ভালোলাগা শুরু করলো সাতবছর যাবত এখানেই আছি।

শুনশুকে বলেন, ২০০৭ এ আমি প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলাম। প্রথমে ভয় পেয়ে বাংলাদেশে এসেছি। কিন্তু এরপর থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে অনেককিছু জানলাম। আর ধীরে ধীরে এর প্রেমে পড়ে গেলাম। গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের সঙ্গে মিশেছি। জাপান একটা উন্নত দেশ। সেখানে একটা জিনিস হারিয়ে যাওয়ার মতো মানবতা, যা বাংলাদেশের ভেতরে দেখে খুব ভালো লেগেছে। তখনই স্বপ্ন হয়েছে যে, বাংলাদেশে থেকে যেতে চাই।

মায়ের বলেন, আমরা শুধু বাংলাভাষা না, এ দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতির প্রেমে পড়েছি। এ দেশের মানুষের ভাবনা দেখেছি, আর সেখানে দেখেছি এই দেশের মানুষ কিভাবে তাদের দেশকে ভালোবাসে, নিজেদের ভাষাকে ভালোবাসে। পৃথিবীতে অনেক দেশে গিয়েছি, কিন্তু বাংলাদেশ নম্বর ওয়ান যারা নিজেদের ভাষাকে ভালোবাসে। বাঙালি বিশ্বে নম্বর ওয়ান। এই জাতি ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, আমরা জেনেছি।

বাংলা গানের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষে মানুষের ভালোবাসার কথা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চান জানিয়ে শুনশুকে বলেন, মানুষে মানুষে যে সম্পর্ক, ভালোবাসা সেটিকে আমরা গানের মাধ্যমে, এনিমেশনের মাধ্যমে বার্তা আকারে দিতে চাই।

আর বাংলাভাষা শিখতে বাঙালিদের খুব সাহায্য পেয়েছেন বলে জানান মায়েরে। তিনি বলেন, যখন আমরা গ্রামে যাই তখন প্রথম প্রথম বাংলা বুঝতাম না। কিন্তু যখন বাংলা শেখার আগ্রহ প্রকাশ করি, তখন আশেপাশের মানুষজন সবাই মিলে আমাদের বাংলা ভাষা শেখাতো। বাংলাভাষা শেখা কঠিনও ছিল না অবশ্য কষ্ট করতে হচ্ছিল। আজও আমরা প্রতিদিন শিখি।

জাপান ও বাংলাদেশের মধ্যে সুসম্পর্ক আছে উল্লেখ করে দুই দেশের জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মায়ের ও শুনশুকে। দু’দেশ ও দেশের মানুষের মধ্যেকার এ বন্ধুত্ব ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
এসএইচএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ