ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রামুতে বর্ণমালা হাতে হাজারো শিক্ষার্থীর কন্ঠে একুশের গান

সুনীল বড়ুয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
রামুতে বর্ণমালা হাতে হাজারো শিক্ষার্থীর কন্ঠে একুশের গান বর্ণমালা হাতে হাজারো শিক্ষার্থী।

কক্সবাজার: বর্ণমালা হাতে হাজারো শিক্ষার্থীর সমবেত কন্ঠে পরিবেশিত হলো অমর একুশের সেই কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’। মুজিববর্ষ, আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস ও অমর একুশে উপলক্ষে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ব্যতিক্রমী এ আয়োজন করে রামু উপজেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রামু উপজেলা প্রশাসন সংলগ্ন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ আয়োজনকে ঘিরে বসে রামুর শিল্পী, সাহিত্যিক, শিক্ষার্থী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের মিলনমেলা।

রামু উপজেলা কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রণয় চাকমা বলেন, মুজিববর্ষে ভাষা সৈনিকদের সম্মান জানানো এবং শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনের তাৎপর্য সর্বস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে বর্ণমালা হাতে এ আয়োজন।

অনুষ্ঠানে হাজারো কন্ঠে ধ্বনিত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি সবার মনে এক অসাধারণ অনুভূতির জাগ্রত করেছে।

তিনি আরও বলেন, ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষা হিসেবে আন্দোলনের যে গোড়াপত্তন হয়েছিলো ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাজপথে রক্ত ঢেলে তার বাস্তবায়ন করেছিলেন অমর শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ অনেকে। সেসব বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং নতুন প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের চেতনা জাগ্রত করাই এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।

আয়োজনের সমন্বয়কারী রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুমথ বড়ুয়া জানান, বর্ণমালা হাতে অমর একুশের সেই কালজয়ী গান পরিবেশনের মাধ্যমে ভাষা সৈনিকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহ-উদ্দীপনার মাধ্যমে মাতৃভাষার অধিকার আন্দোলনের ইতিহাস জানতে পারবে।

তিনি আরও বলেন, ইউএনও প্রণয় চাকমা রামুতে যোগদানের পর থেকে একের পর সৃজনশীল কর্মকাণ্ড এবং কর্মদক্ষতা দিয়ে মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। মুজিববর্ষে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবসের তাৎপর্য নিয়ে এ আয়োজনও সর্বত্র প্রশংসিত হচ্ছে।

বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার কেন্দ্রের সংগীত প্রযোজক কন্ঠশিল্পী বশিরুল ইসলাম জানান, বর্ণমালার প্রতি আকর্ষণ বৃদ্ধি এবং ভাষা আন্দোলনকে শিশু-শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে ধারণ করতে এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। ভাষা সৈনিকদের স্মরণে এ গানটি কেবল বছরের একটি দিনই গাওয়া হয়। এছাড়া গানটির তেমন চর্চা থাকে না। তাই এ ধরনের উদ্যোগের ফলে শিক্ষার্থীরা গানটি আরও বেশি চর্চার সুযোগ পাবে।

আয়োজকেরা জানান, রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, রামু উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, বাঁকখালী উচ্চ বিদ্যালয়, রামু কলেজ বিএনসিসি, রামু কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মণ্ডলপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রামু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বার্মিজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ অন্তত বিশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বর্ণমালার বর্ণ হাতে নিয়ে একুশের গান পরিবেশন করেন।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রণয় চাকমার উদ্যোগে গত ২২ জানুয়ারি বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর এক হাজার ছবি নিয়ে এক হাজার ফুট দীর্ঘ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। যে অনুষ্ঠানটি দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৪৩৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
এসবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ