ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

র‍্যাব পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেফতার ২

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
র‍্যাব পরিচয়ে ডাকাতি, গ্রেফতার ২

ঢাকা: রাজধানী থেকে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) পরিচয়ে ডাকাতি চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার দুই ব্যক্তি হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে স্বাধীন (৪৭) ও আলমগীর খাঁ (৩৫)।

পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) বিশেষ পুলিশ সুপার মো. বশির আহমেদ জানান, গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টায় খিলক্ষেত থেকে বাসে করে যাত্রাবাড়ী যাচ্ছিলেন মো. মাহামুদুল হাসান (২২) নামের এক ব্যক্তি। সকাল ১১ টার দিকে গাড়িটি যাত্রাবাড়ী থানার শনির আখরা ফুটওভার ব্রিজের নিচে পৌঁছায়।

এরপর র্যাবের জ্যাকেট পরা অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন অভিযোগ আছে বলে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে মাহমুদল হাসানকে গাড়ি থেকে নামান ও তার কাছে থাকা একটি আইফোন, একটি শাওমি রেডমি নোট ও নগদ ৩ লাখা টাকা ছিনিয়ে নেন।  

পরে তার মুখ চেপে ধরে মারতে মারতে ব্রিজের নীচে থাকা ডাকাত দলের এক্স করোলা গাড়িতে ওঠানো হয়। এ পর্যায়ে বাঁচার জন্য চিৎকার করতে থাকলে এক উবার চালক, ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল ও আশপাশের জনতা ভুক্তভোগী মাহমুদুলকে বাঁচাতে এগিয়ে যান। এ পর্যায়ে ওই ডাকাত দল নিজেদের গাড়ি ও র‍্যাবের জ্যাকেট ফেলে দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে ট্রাফিক পুলিশের মুঠোফোন থেকে ভাইকে ফোন করে ঘটনা সম্পর্কে জানান মাহমুদুল। এরপর তার ভাই ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে সহায়তা চাইলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং সেখান থেকে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া এক্স-করোলা গাড়ি, র্যাবের জ্যাকেট, গাড়ির কাগজপত্র ও আইডি কার্ড উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ভাই যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলাও দায়ের  করেন।
 
পিবিআই কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, পরবর্তী সময়ে মামলাটির তদন্ত শুরু করে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। তদন্তকালে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে পিবিআই ঢাকা মেট্রোর (উত্তর) একটি বিশেষ দল গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় দারুসসালাম খালেক ফিলিং স্টেশনের সামনে অভিযান চালিয়ে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে স্বাধীন নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই দিন রাত সাড়ে ৮টায় মোহাম্মদপুর কলেজ গেটের সামনে অভিযান চালিয়ে আলমগীর খাঁ নামে আরেও একজনকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পিবিআই জানায়, গ্রেফতাররা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দলের সদস্য। তাদের প্রথম পরিচয় হয় জেলখানায়। এরপর তারা শুরু করে ডাকাতি কার্যক্রম। কখনো র‍্যাব, কখনো ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ঢাকা মহানগরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নানা জনকে প্রথমে অপহরণ ও পরে ডাকাতি করে সর্বস্ব লুটে নিত তারা। ডাকাত দলের এ সদস্যরা দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যবসায়ীদের বড় অংকের নগদ টাকার লেনদেন সর্ম্পকে তথ্য সংগ্রহ করে টাকা নিয়ে যাওয়ার সময় অনুসরণ করত। পথের মধ্যে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে ওইসব ব্যক্তির কাছ অবৈধ জিনিস আছে বলে আটক করত এবং মাইক্রোবাসে করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যেত। পরবর্তী সময়ে নিরিবিলি ও সুবিধাজনক স্থানে নিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মারধর করে ভিকটিমদের কাছে থাকা টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র লুটে নিত। ডাকাতি করার জন্য তারা সাধারণত মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকার ভাড়া করতো। এ আসামিদের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
এমএমআই/এইচজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।