ঢাকা, সোমবার, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড: ক্ষতিপূরণের আশায় এখনও অপেক্ষা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড: ক্ষতিপূরণের আশায় এখনও অপেক্ষা

ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ক্ষতিপূরণ না পাননি নিহতের স্বজন ও ক্ষতিগ্রস্তরা।

গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) চুড়িহাট্টার ওয়াহেদ ম্যানশনের সামনে জড়ো হন বেশ কয়েকজন নিহতের স্বজন এবং আশেপাশের বিভিন্ন স্থাপনা এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষতিগ্রস্তরা। তাদের অভিযোগ, নিহতের স্বজনদের এবং ক্ষতিগ্রস্তদের দেওয়া নানা প্রতিশ্রুতি ছিল প্রশাসনের।

কিন্তু এক বছরেও সেসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি।

আর পড়ুন...চুড়িহাট্টা ট্র্যাজেডির বর্ষপূর্তি বৃহস্পতিবার 

নোয়াখালীর আহসান উল্লাহের বাবা সিদ্দিক উল্লাহ (৪৫) ওই ঘটনায় প্রাণ হারান। আহসান বাংলানিউজকে বলেন, চার ভাই, এক বোন আর মায়ের জন্য একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন আমার বাবা। বাবার মৃত্যুর পর আমার দুই ভাইয়ের পড়াশোনা বন্ধ করে কাজে লাগিয়ে দিয়েছি। প্রশাসন আমাদের বিভিন্ন রকম সহায়তা করবে বলেছিল। কিছুই পায়নি। আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি, আমরাও চেষ্টা করে পারিনি।  

আরও পড়ুন...নিষ্প্রাণ ওয়াহেদ ম্যানশনের দেয়ালে পোড়া ক্ষত!

ওই দুর্ঘটনায় নিহত শাহীন মোল্লার (৪০) স্ত্রী ময়না বেগম বাংলানিউজকে বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে বলা হযেছিল যে, নিহতের পরিবার থেকে স্বজনদের চাকরি দেওয়া হবে। আমার পরিবারে তো আর কেউ নেই এক ছেলে ছাড়া। আমাকে বা ছেলেকে একটা চাকরি দিলে আমরা খেয়ে পরে থাকতে পারতাম। এই একটা বছর কিভাবে চলছি আমরা জানি।  

এদিকে, ওয়াহেদ ম্যানশনের নিচে প্লাস্টিকের দোকান ‘মুক্তা প্লাস্টিক’র সত্ত্বাধিকারী আব্দুল কাদের। আপন ভাতিজা সিদ্দিককে তো হারিয়েছেন, দোকানের মালামাল হারিয়েও হয়েছেন সর্বশান্ত। বাজারে থাকা লক্ষাধিক পাওনা টাকা ও পাচ্ছেন না এই ব্যবসায়ী। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ঘটনার পর দোকান বন্ধ ছিল। দোকানে যে মাল ছিল সেগুলো তো শেষই। বাজারে অনেক পাওনা ছিল। দোকান বন্ধ থাকায় সেগুলোও পাচ্ছি না। এখন আবার দোকান দিয়েছি যেন সেই টাকাগুলো উঠাতে পারি। দোকানে নতুন মাল উঠানোর চালান ও নেই। সিটি করপোরেশন থেকে বলেছিল আমাদের অর্থ সহায়তা দেবে, কেউ কেউ বলেছিল যে, বিনাসুদে ব্যাংক থেকে লোন দেবে। কিছুই তো পেলাম না।

আরও পড়ুন...ভয়ঙ্কর সেই রাতের আগুনময় চকবাজার

প্রশাসন বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রতি এমনই অভিযোগ স্বজন হারা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের।

এসব বিষয়ে জানতে ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের কাছে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মোবাইলে ফোন ও মেসেজ দেওয়া হলেও কোনো উত্তর আসেনি। এক দফা সাঈদ খোকনের প্রটোকল কর্মকর্তা মোহাম্মদ সুমন ফোন ধরে বলেন, ‘স্যার মিটিং এ আছেন। একটু পর কল দিন। ’

এরপরেও আরও কয়েক দফা ফোন করা হলেও পাওয়া যায়নি মেয়র খোকনকে। তবে ডিএসসিসি’র জনসংযোগ বিভাগ থেকে এক অনুষ্ঠান কাভারেজের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেই আমন্ত্রণে জানানো হয়, পুরনো ঢাকার চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত, নিহত স্বজনদের চাকরি, আর্থিক সহায়তা, নিহত স্বজনদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) নগর ভবনে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ২০৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২০
এসএইচএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।