ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পেঁয়াজ নিয়ে বিরোধীদলের তোপের মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২০
পেঁয়াজ নিয়ে বিরোধীদলের তোপের মুখে বাণিজ্যমন্ত্রী

জাতীয় সংসদ ভবন থেকে: পেঁয়াজের দাম ও রমজানে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা নিয়ে বিরোধীদলের সংসদ সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

বুধবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে কোম্পানি (সংশোধন) বিল-২০২০ পাসের আগে বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরা জনমত যাচাই-বাছাই ও সংশোধনী প্রস্তাবের ওপর আলোচনার সময় পেঁয়াজ নিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর তীব্র সমালোচনা করেন। এরপর সংসদ সদস্যদের সমালোচনার উত্তরে বাণিজ্যমন্ত্রী একথা জানান।

এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন।

তিনি বলেন, আমরা এই বিপদ সম্পদে পরিণত করবো। আপনারা একটু অপেক্ষা করেন। আগামী তিন বছর পর আমরা পেঁয়াজে উদ্বৃত্ত হবো, রপ্তানি করবো।

বিলের উপর আলোচনার সময় সংসদ সদস্যরা বলেন, আপনি (টিপু মুনশি) দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই পেঁয়াজের দাম ২শ টাকা কেজিতে পৌঁছায়। আপনি মানুষকে বাঁচান। সামনে রোজার মাস। তখন পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছাবে বাণিজ্যমন্ত্রী কি ভাবছেন।  

বিরোধীদলের সদস্যদের সমালোচনার পর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, যতদিন পর্যন্ত নিজেদের উৎপাদনে স্বয়ংসম্পন্ন না হই, আমাদের যদি পরের ওপর নির্ভরশীল হতে হয়, তাহলে তাদের অবস্থানের সঙ্গে আমাদের অবস্থান পরিবর্তিত হয়। আমাদের দেশে প্রয়োজন প্রায় ২৫ লাখ টন, তারমধ্যে ৮-৯ লাখ টন বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। এটা ধারবাহিকভাবে চলে আসছে। ওই আমদানির ৮-৯ লাখ টনের মধ্যে ৯০ শতাংশই ভারত থেকে আনতে হয়েছে।

‘ভারত উদ্বৃত্তের দেশ, তারা পেঁয়াজ রপ্তানি করে। কিন্তু তারা গত ২৯ সেপ্টেম্বর রপ্তনি বন্ধ করে দিল। এরপর বিকল্প বাজার থেকে আমাদের আনতে সময় লেগেছে। বিকল্প মার্কেট থেকে পেঁয়াজ আনতে ৪৫-৫০ দিন সময় লেগেছে। এবার ভারতেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১৫০ রুপিতে উঠেছিল। প্রধানমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী তি বছরের মধ্যে আমরা উদ্বৃত্তের দেশ হবো। এবার আমাদের চোখ খুলে গেছে। ’

তিনি বলেন, আপনারা নিজের এলাকায় প্রত্যেকে একটু প্রোঅ্যাকটিভ হন। একটু পেঁয়াজ লাগিয়ে দেন না কেন? একটা সময় তো নিশ্চই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে হবে।  

রোজা উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রস্তুতি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, গত তিন মাস ধরে ৩শ জায়গায় আমরা ৩৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ দিচ্ছি। রমজান মাস উপলক্ষে ৩০ হাজার টন ভোজ্যতেল, ৩০ হাজার টন চিনি ব্যবস্থা করে রেখেছি। গত রোজায় কোনো সমস্যা হয়নি, এবার হবে না সেটা বলছি না। তবে আমরা সতর্ক আছি, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছি। গত রমজানের তুলনায় দশ গুণ শক্তি নিয়ে বাজারে থাকবো।

আলোচনায় জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছিলেন পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর নাম গিনেজ বুকে নাম লেখানো যেতে পারে।

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, একজন সদস্য বলেছেন পেঁয়াজের দামের জন্য বাণিজ্যমন্ত্রীর নাম গিনেজ বুকে লেখানো যেতে পারে। আমি অপেক্ষা করতে বলবো, তিন বছর পর আমরা যখন উদ্বৃত্ত করবো, রপ্তানি করবো তখন তিনি এই অনুরোধটা পাঠাবেন।

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্ন বলেন, দেশের মানুষ তো খুব সমস্যায় আছে। আপনি মন্ত্রী হওয়ার পর ২শ টাকা কেজি হলো পেঁয়াজের মূল্য। এটা কমাতে পারেন না, আপনি আইন পরির্তন করার জন্য আসছেন। সামনে রোজার মধ্যে মানুষ তো পেঁয়াজু আর খাবে না। এটা জনগণের খাওয়া সম্ভব না। আগামী রোজার মধ্যে পেঁয়াজ, লবণ, তেল, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্য বাড়বে না এই গ্যারান্টি দিতে পারবেন? 

জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, তিনি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পরে আমাদের পেঁয়াজ এখন গিফট আইটেমে পরিণত হয়েছে। এই গিফট আইটেম থেকে পেঁয়াজকে সবজিতে আবার নিয়ে যাবেন কিনা? মানুষ বিয়েতে যায় অন্য কোনো গিফট নিয়ে যায় না, পেঁয়াজ নিয়ে যায় ২/৩ কেজি। এটি থেকে কীভাবে মানুষকে রক্ষা করবেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০
এসকে/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।