ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

কক্সবাজারের পরিবেশের উন্নয়নে জাতিসংঘ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
কক্সবাজারের পরিবেশের উন্নয়নে জাতিসংঘ

ঢাকা: কক্সবাজারে পরিবেশের উন্নয়ন, জীবিকার সুযোগ বাড়ানো ও পরিবেশবান্ধব গ্যাস সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে জাতিসংঘ। কক্সবাজারে বৃক্ষ উজাড় হওয়া রোধ ও এ অঞ্চলে জীবিকার সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে ঢাকায় সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের তিনটি সংস্থা মিলে শুরু করলো সেইফ একসেস টু ফুয়েল অ্যান্ড এনার্জি প্লাস লাইভলিহুড (সেইফ প্লাস) প্রকল্প।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সরকার ও জাতিসংঘের মধ্যে এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হয়েছে। সেইফ প্লাস জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডব্লিউএফপি) যৌথ উদ্যোগে নেওয়া এক প্রকল্প।

যার মাধ্যমে বিভিন্নভাবে (যেমন: তরল পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) ও স্টোভ বিতরণ, পুনঃবনায়ন এবং লাইভলিহুড কার্যক্রমের দ্বারা অধিকতর খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে) পরিবেশ বিপর্যয়রোধে কাজ করা যাবে।

এলপিজি স্টোভ ও গ্যাস বিতরণের ফলে মানুষের জ্বালানি কাঠের প্রয়োজনীয়তা কমে আসবে। ফলে, জ্বালানি কাঠ ব্যবহারের মাধ্যমে সৃষ্ট পরিবেশের ক্ষতিরোধ করা যাবে। এ পুনঃবনায়ন কার্যক্রম বনসম্পদ পুনরুদ্ধার এবং সেইসঙ্গে প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় কাজ করবে। লাইভলিহুড ও সেল্ফ রিলায়েন্স কার্যক্রমের মাধ্যমে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর খাদ্য উৎপাদন ও ব্যবসার সুযোগ বাড়ানো হবে, যার মাধ্যমে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. শাহ্ কামাল বলেন, কক্সবাজারের পরিবেশ-বিষয়ক ব্যাপারগুলো চিহ্নিত করতে এবং এ নিয়ে কাজ করতে জাতিসংঘকে সঙ্গে পেয়ে আমার মন্ত্রণালয় অত্যন্ত খুশি। আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের এ ব্যাপারে আরও সহযোগিতা করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করছি।
 
সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের জাতিসংঘ উইংয়ের অতিরিক্ত সচিব সুলতানা আফরোজ বলেন, আমাদের নিজেদের অনেক সমস্যা থাকা সত্ত্বেও সরকার ও এদেশের জনগণ যে উদারতার পরিচয় দিয়েছে তা দৃষ্টান্তমূলক। এখন এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব বাংলাদেশ যেন এ বোঝা একাই বহন না করে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের মধ্যদিয়ে এ সংকটের টেকসই সমাধান আসে।
 
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, যতদিন না রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন শেষ হবে, ততদিন পর্যন্ত সেইফপ্লাস প্রকল্প চালিয়ে যাওয়া উচিৎ।

এফএও বাংলাদেশের প্রতিনিধি রবার্ট সিম্পসন বলেন, সেইফ প্লাস জাতিসংঘের এ তিনটি সংস্থা ও সরকারি সংস্থাগুলোর কারিগরি দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যার মাধ্যমে কক্সবাজারের জনগোষ্ঠীর নিত্য নতুন প্রয়োজনগুলো মেটানো হবে। তিনি আরও বলেন, খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা, জীবিকার সুযোগ বাড়ানো ও সামাজিক সংহতিকে মজবুত করার মতো বিভিন্ন ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
 
ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ রিচার্ড রেগান বলেন, ‘কক্সবাজারের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চাবিকাঠি হলো আমাদের পরিবেশ রক্ষা করা ও জীবিকার সুযোগ বাড়ানো। তিনি আরও বলেন, জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে একত্রে কাজ করার মাধ্যমে আমরা সমন্বিত ও সর্বাত্মক কার্যক্রম নিশ্চিত করে চলেছি, যার মাধ্যমে পরিবেশ বিপর্যয়ের মূল কারণগুলো চিহ্নিত করা যাবে এবং এর পাশাপাশি কক্সবাজারের জনগণের জীবিকার সুযোগ বাড়ানো যাবে।

এই বছরজুড়ে সেইফ প্লাসের মাধ্যমে কক্সবাজারের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পরিবারগুলোকে লাইভলিহুডস্ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করা হবে, কৃষকদের অধিক চাহিদাসম্পন্ন সবজিগুলোর উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কারিগরি সহায়তা দেওয়া হবে। পাশাপাশি চলবে পুনঃবনায়ন কার্যক্রম।

বাংলাদেশ সময়: ১১১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২০
এমআইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।