ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বসন্তের রঙ ছুঁয়ে চলছে ভালোবাসার উদযাপন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
বসন্তের রঙ ছুঁয়ে চলছে ভালোবাসার উদযাপন

রাজশাহী: ভালোবাসার দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার)। মানুষে-মানুষে ভালোবাসার বহুমাত্রিক রূপ প্রকাশের আনুষ্ঠানিক দিন এদিন। তবে এ ভালোবাসা কেবল তরুণ-তরুণীর নয়। যেমন বাবা-মা’র প্রতি সন্তানের, সন্তানের প্রতি বাবা-মা’র, তেমনি মানুষের প্রতি মানুষেরও। এজন্য ভালোবাসা নিয়ে ছড়িয়ে থাকা পৌরাণিক সব উপাখ্যান ভুলে সবাই মিশেছে একই মোহনায়। ফুলের স্নিগ্ধতায় ভালোবাসা ও অনুরাগে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে পদ্মাপাড়ের শহর রাজশাহীতেও। 

সাধারণত বছরের এই বিশেষ দিনটিকেই অনেকে বেছে রাখেন মনের যত বাসনা ও অব্যক্ত কথা প্রকাশ করার জন্য। তাই বসন্তের মৃদু-মন্দ হাওয়ায় না বলা কথাগুলো আজ তাদের মধ্যে ডালপালা মেলছে।

প্রিয়জনের হাতে রক্তরাঙা গোলাপ দিয়ে বলছেন মনের গহীনে জমানো কথাগুলো।

সেজন্য সকাল থেকে মহানগরীর ফুলের দোকানগুলোতে তরুণ-তরুণীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভালোবাসার উৎসবে মুখর হয়ে উঠেছে গোটা রাজশাহী। উৎসবের ছোঁয়া লেগেছে গ্রাম-বাংলার জনজীবনেও। মোবাইল ফোনের মেসেজ, ই-মেইল অথবা অনলাইনের চ্যাটিংয়ে পুঞ্জপুঞ্জ ভালোবাসার কথার পরিস্ফুটিত হচ্ছে।

নানান স্বাদের কেক, চকোলেট, পারফিউম, গ্রেটিংস কার্ড, ই-মেইল, মোবাইলে এসএমএস-এমএমএস, প্রিয় পোশাক, জড়াজড়ি করা খেলনা মার্জার অথবা বই উপহার দিচ্ছেন প্রিয়জনকে। তাই সকাল থেকে মহনগরীর উপহার সামগ্রীর দোকানগুলোর বিকিকিনিও জমে উঠেছে।  

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, পদ্মাপাড়, কেন্দ্রীয় উদ্যান, জিয়া পার্ক, টি-বাঁধ, ভদ্রার শহীদ মনসুর রহমান পার্ক, পদ্মা গার্ডেনসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বিনোদনপ্রেমীরা।

কেউ বন্ধুদের নিয়ে, কেউ প্রিয়তম, কেউ আবার পরিবার-পরিজন নিয়ে আসছেন এসব স্থানে। বেলা যত গড়াচ্ছে ভিড় ততই বাড়ছে।

মহানগরীর বড়কুঠি পদ্মাপাড়ের ফুচকা ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন বলেন, শুক্রবার ছুটির দিন এমনিতেই ভিড় হয়। তার ওপর বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবস। তাই সকাল থেকেই বেচাকেনা জমজমাট। তবে বিকেলে আরও বেশি মানুষ পদ্মাপাড়ে বেড়াতে আসছেন।

ফলে ব্যস্ততা বেড়েছে। পহেলা ফাল্গুন ও ভালোবাসা দিবসে এরইমধ্যে তিন হাজার টাকার ফুচকা বিক্রি করে ফেলেছেন। এখনও সন্ধ্যা হতে অনেক বাকি। তাই এর পরিমাণও বাড়বে বলেও আশা প্রকাশ করেন, পদ্মাপাড়ের এই ফুচকা ব্যবসায়ী।

রাজেশ রায়, মহানগরীর সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট এলাকার ফুল ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, আজ লাল ফুলেরই চাহিদা বেশি। বিশেষ করে গোলাপের চাহিদাই বেশি। তবে গাঁদা ও রজনীগন্ধা ফুলও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন ফুলের সংমিশ্রণে তৈরি করা ফ্লাওয়ার রিং অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। আজ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রীরাই তাদের প্রধান ক্রেতা।  

তবে তরুণ-তরণী ছাড়াও বিভিন্ন বয়সের মানুষও আসছেন ফুল কিনতে। সব ফুলের দাম আগের মতই আছে। শুধু গোলাপের দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু আনন্দের মুহূর্তে কেউ আর আজ দাম নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন বলে জানান শহরের প্রাণকেন্দ্র সাহেব বাজারে থাকা এই ফুল ব্যবসায়ী।

তবে রাজশাহী কলেজের ইতিহাস বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্রী শাহানাজ রহমান বলেন, ভালোবাসা ও বসন্তবরণ উৎসব একদিন হওয়ায় আজ ফুলের বাজার চড়া। প্রতিটি ফুলেরই দাম বেশি নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। অন্য সময় যে গোলাপ ১০/১৫ টাকা আজ তা ৩০/৪০ টাকা হাঁকছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া রজনীগন্ধ্যার স্টিকসহ প্রতিটি ফুলেরই দাম দুই থেকে তিনগুণ বেশি বলে অভিযোগ করেন এই ফুল ক্রেতা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
এসএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।