ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

লালমনিরহাট পৌর মেয়রকে লিগ্যাল নোটিশ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
লালমনিরহাট পৌর মেয়রকে লিগ্যাল নোটিশ

লালমনিরহাট: নকশা পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণ কাজ বন্ধ করতে লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টুকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছে লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্র।

বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে এ লিগ্যাল নোটিশটি পাঠান লালমনিরহাট জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ।

লিগ্যাল নোটিশে বলা হয়, লালমনিরহাট পৌরসভার সাপ্টানা মৌজার মাতৃ মঙ্গল কেন্দ্রের পাশে ১৯৭২ সালে ১৪.৫০ শতাংশ জমির উপর সড়কের পাশে পশ্চিম মুখো দৃষ্টিনন্দন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

সেই থেকে জেলাবাসী বিভিন্ন কর্মসূচি এ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পালন করে আসছেন। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাশে আলিসান বাড়ি নির্মাণ করেন জেলার প্রভাবশালী শাখাওয়াত হোসেন সুমন খাঁন। যা শহীদ মিনারের কারণে দৃষ্টির অাঁড়ালে পড়ে।  

প্রভাবশালীর এই আলিসান বাড়িটি দৃষ্টিনন্দন করতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি স্থানান্তর করতে এবং  পুনঃনির্মাণের নামে নকশা পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণকাজ শুরু করে পৌরসভা। ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৯৩৭ টাকা ব্যয়ে পুনঃনির্মাণ করা শহীদ মিনারের মূল বেদী পরিবর্তন করে উত্তর-পুর্ব কোনায় নেওয়া হচ্ছে। ফলে সড়কের চলাচলকারী সর্বসাধারণের দৃষ্টির আঁড়ালে চলে যাচ্ছে এবং দৃষ্টিহীন হয়ে জৌলুস ও মর্যাদা হারাচ্ছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার।

বিষয়টি নিয়ে জেলার সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নিন্দার ঝড় ওঠে। পুনঃনির্মাণকাজ বন্ধ করতে আন্দোলনে নেমে পড়েন জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের মানুষ। সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ দিয়েও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সৌন্দর্য ফেরাতে ব্যর্থ হয়ে লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দ সুফী মো. তাহেরুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতের দারস্থ হন। যার পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণকাজ বন্ধ করতে বৃহস্পতিবার তিন দিনের সময় দিয়ে পৌরসভার মেয়রকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।  

লালমনিরহাট সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক সাংস্কৃতিক কর্মী সৈয়দ সুফী মো. তাহেরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, প্রভাবশালীর আলিসান বাড়ি দৃষ্টিনন্দন করতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সৌন্দর্য নষ্ট করা জাতির জন্য লজ্জার ও অপমানের। এটা শুধু ভাষা শহীদের নয়, গোটা জাতিকে অপমানিত করছে। শহীদ মিনারের সৌন্দয্য রক্ষায় ঊর্ধ্বতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

জজ আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান হাফিজ বাংলানিউজকে বলেন, আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না পেলে মেয়রের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।  

লালমনিরহাট পৌর মেয়র রিয়াজুল ইসলাম রিন্টু বাংলানিউজকে বলেন, ঢাকায় ছিলাম অফিসে যাইনি, তাই লিগ্যাল নোটিশের বিষয়ে কিছু জানি না। নোটিশ দিলে অফিসে আছে। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পুনঃনির্মাণকাজ শেষ হলে দেখা যাবে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায় কি না? । যারা আন্দোলন করছেন তারা না বুঝেই এমনটা করছে। নির্মাণকাজ বন্ধ করা হবে না বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ০৩১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।