ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

চীন থেকে দেশে ফেরার আকুতি শিবচরের আবিরের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২০
চীন থেকে দেশে ফেরার আকুতি শিবচরের আবিরের চীনে আটকে পড়া আশিক হাওলাদার আবির।

মাদারীপুর: সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চীনের হুবেই প্রদেশের বিভিন্ন শহরে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে সঙ্গে আটকে পড়েছেন বাংলাদেশিসহ অন্য দেশের নাগরিক। হুবেই প্রদেশের ইচাং শহরের ‘চায়না গর্জেজ ইউনিভার্সিটি’র এমবিবিএস ৫ম বর্ষের শিক্ষার্থী মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বাসিন্দা আশিক হাওলাদার আবির তাদের একজন।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে বাংলানিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে ফোনে কথা হয় আবিরের। এসময় তিনি সরকারের নিকট তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার আকুতি জানান।

তিনি জানান, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহান থেকে দু’শ ৮০ কিলোমিটার দূরে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট দু’শ ৪০ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের আগে শীতকালীন ছুটি উপলক্ষে ৬৮জন শিক্ষার্থী দেশে এসেছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় হলে আছেন একশ ৭২ বাংলাদেশি শিক্ষার্থী।

তিনি আর জানান, ইতোমধ্যেই করোনা ভাইরাসে ইচাং শহরে মৃত্যুবরণ করেছে ছয়জন। এছাড়া আরও পাঁচশ জন রোগী এ ভাইরাসে আক্রান্ত। গত ২৩ জানুয়ারি থেকে পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই চীনা সরকার শহরটির বাসিন্দাদের আবদ্ধ করে। ইচাং শহর থেকে কাউকে বের হতে বা শহরে কারও প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

শহরের রেলস্টেশন, বিমানবন্দর ও শহরের সবধরণের যান-চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমনকি শহরের বাজার-ঘাটসহ ছোট ছোট দোকানগুলোও বন্ধ আছে।

আবির জানান, করোনা ভাইরাসের ফলে এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা হলের মধ্যে বন্দি জীবন কাটাচ্ছেন। দেশে ফিরতে না পারায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন তারা। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতিদিনই বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। পুরো পরিস্থিতিতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।  

আশিক হাওলাদার আবির বাংলানিউজকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমরা দেশে ফিরতে চাই। এখানকার পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। বিশুদ্ধ পানি, খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। হল থেকে বের হবারও সুযোগ নাই। এর আগে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাথে যোগাযোগ করেছিলাম দেশে ফিরিয়ে নেবার ব্যাপারে। তখন তারা আশ্বাস দিলেও বর্তমানে দেশে ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে কিছুই বলছেন না। ’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশ থেকে বাবা-মায়েরা ফোন দিয়ে কান্নাকাটি করেন। এদিকে আমরাও কোনো ভালো লক্ষণ দেখছিনা। আমাদের চারপাশেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে এখানকার মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে বন্দী অবস্থায় আছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ আমাদের দেশে ফিরিয়ে নিন। এখানে থাকলে হয়তো করোনা ভাইরাসে মৃত্যুও হতে পারে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৩২১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২০
এবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।