ঢাকা, রবিবার, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ মে ২০২৪, ২৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সৈয়দপুরে ইটভাটায় বন্ধ হচ্ছে না শিশুশ্রম

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২০
সৈয়দপুরে ইটভাটায় বন্ধ হচ্ছে না শিশুশ্রম

নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুরের ইটভাটাগুলোতে শিশুশ্রম বন্ধ হচ্ছে না। সস্তা ও সহজে এসব শিশু ও কিশোর শ্রমিক মেলায় ভাটা মালিকরা তাদের কাজে লাগাচ্ছেন। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ৩৪টি ইটভাটায় কম-বেশি এসব শ্রমিক জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে।

উপজেলার সবচেয়ে বেশি ইটভাটা রয়েছে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নে। এখানে ২২টির মতো ইটভাটা রয়েছে।

এসব ইটভাটায় কর্মরত শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের ছোট ছেলে-মেয়েরাও কাজ করছে। কাঁচা ইট তৈরি, পরিবহন, ইট তৈরির কাঁদা বহন, ইট শুকানো ইত্যাদি কাজ করছে শিশু শ্রমিকরা। বিনিময়ে তারা মজুরি হিসেবে পাচ্ছে মাত্র ২০ টাকা।
 
এ প্রসঙ্গে কামারপুকুরের এক ইটভাটা মালিক ছাবেদুল ইসলাম জানান, আমরা শিশু-কিশোরদের দিয়ে ইটভাটায় কাজ করাতে চাই না। কিন্ত ভাটায় কাজ করা শ্রমিকরা অভাবের কারণে দুটো পয়সা বেশি পাওয়ার আশায় তাদের ছোট ছেলেদের এনে ভাটার কাজে লাগান।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদ জানান, এ সংক্রান্ত আইন রয়েছে তবে তা এখনও গেজেটভুক্ত না হওয়ায় সে অনুযায়ী আইন প্রয়োগ করা সম্ভব নয়। কিন্তু তারপরও যদি আমরা ইটভাটার বিরুদ্ধে আইন অমান্যের কোনো অভিযোগ পাই তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিশেষ করে শিশু শ্রম বিষয়ে।  

গেল বছর ২৫ জানুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ভাটায় কয়লা বোঝাই ট্রাক উল্টে ঘুমন্ত ১৩ শ্রমিক নিহত হয়। নিহত শ্রমিকদের মধ্যে ছিল ১০ স্কুলছাত্র। এদের বাড়ি ছিল নীলফামারী জেলার জলঢাকা উপজেলার নিজবাড়ি ও আরাজি শিমুলবাড়ি গ্রামে। এক বছর অতিবাহিত হলেও আজও নিহতের স্বজনদের চোখে-মুখে শুন্যতার ছাপ।

অভাব-অনটনের সংসারে পড়াশোনার খরচ আর এক শ্রেণির ভাটা সর্দারের প্রলোভনে পরে বাবা-মায়ের অজান্তে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের একটি ভাটায় কাজ করতে গিয়েছিল ১১ স্কুলছাত্র। এদের মধ্যে ছিল মীরগঞ্জহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ৭ সহপাঠী। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বের হয় কৃষ্ণ রায়। ভাগ্যক্রমে সে বেঁচে গেলেও সহপাঠীদের জন্য মন কেঁদে ওঠে তার।

এবারো এ দুটি গ্রাম এবং পাশের গ্রাম থেকে অর্ধশতাধিক শ্রমিক কুমিল্লার ওই ভাটাসহ দেশের বিভিন্ন ভাটায় কাজ করছে। রয়েছে স্কুলছাত্র ও কম বয়সী বালকেরা। অভাবের সময় ভাটা সর্দারের দেওয়া আগাম শ্রমবিক্রির টাকা পরিশোধ করতে বাধ্য হয়ে ভাটা শ্রমিকের কাজ করতে হয় বাবার সঙ্গে তাদের।  

এলাকাবাসীর অভিযোগ, এতো বড় দুর্ঘটনার পরেও ওই ভাটা চালু রয়েছে কিভাবে? অপরদিকে স্কুল শিক্ষকদের দাবি, এবার গরীব ছাত্ররা ঝুঁকিপূর্ণ এসব কাজে গেলেও তাদের তৎপরতায় সে সংখ্যা কম।

নীলফামারী জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান, স্কুলছাত্র বা শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হলে সেসব ভাটা মালিকদের লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।