ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

পদ্মায় রেল সংযোগে অগ্রগতি ২২ শতাংশ, কমছে ঋণের বোঝা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
পদ্মায় রেল সংযোগে অগ্রগতি ২২ শতাংশ, কমছে ঋণের বোঝা

ঢাকা: দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতু প্রকল্পের মূল কাজ, বাকি মাত্র ১৫ শতাংশ। চারিদিকে চলছে সেতু নির্মাণ শেষ করার মহাযজ্ঞ। সেতুতে রোডওয়ের কাজও দৃশ্যমান। এই রোডওয়ের ওপর দিয়ে ২০০ মিলিমিটার (৮ ইঞ্চি) পুরো বিটুমিনাস ঢালাই দেয়া হবে। পরে এই ঢালাইয়ের ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন। 

সেতুতে রেলওয়ে স্ল্যাবের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৭৫০ মিটার ছাড়িয়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বর পযর্ন্ত পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ২১.৯৩ শতাংশ এবং আর্থিক অগ্রগতি ৩০.২২ শতাংশ। এরইমধ্যে ১১ হাজার ৮৬০ কোটি ৯ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে প্রকল্পের আওতায়।
 
সরকারের অগ্রাধিকারের (ফাস্ট ট্র্যাক) 'পদ্মা রেল সংযোগ' প্রকল্পটি থেকে চীনা ঋণের বোঝা কমছে ১৫ শতাংশ, যা টাকার অংকে প্রায় ৩ হাজার ৭১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এই টাকা সরকারি খাত থেকে বহন করা হবে। প্রথমে চীনা ঋণের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার ৭৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকা এখন চীনা ঋণ কমে দাঁড়াচ্ছে ২১ হাজার ৩৬ কোটি ৬৯ লাখ টাকা।
 
প্রকল্পের আওতায় চীনা ঋণ কমিয়ে সরকারি বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ৭ হাজার ৯৭০ কোটি ৩ লাখ টাকা। প্রথমে এই প্রকল্পে সরকারি বরাদ্দ ছিল ১০ হাজার ২৩৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
 
আরও পড়ুন...২২তম স্প্যান বসছে বৃহস্পতিবার, দৃশ্যমান হবে ৩৩শ মিটার

চীনা ঋণ কমিয়ে এবং সরকারি বরাদ্দ বাড়িয়ে এখন প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াচ্ছে ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকা। মূল প্রকল্পের মোট ব্যয় ছিল ৩৪ হাজার ৯৮৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা।
 
সরকারকে এ ঋণ নিতে হবে প্রিফারেনশিয়াল বায়ার্স ক্রেডিটে (অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে)। সুদ ২ শতাংশ। ঋণ পরিশোধ করতে হবে ২০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে রেয়াতকাল ৬ বছর।
 
প্রকল্প পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বাংলানউজকে বলেন, দ্রুত গতিতে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে, বর্তমানে সার্বিক অগ্রগতি ২২ শতাংশ। প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ হয়েছে ৯০ শতাংশ।
 
ঋণের বোঝা কমে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রকল্পের আওতায় চীনা ঋণের বোঝা কমেছে ১৫ শতাংশ। আমাদের দেশ উন্নত হচ্ছে ঋণ পরিশোধের সক্ষমতাও বাড়ছে। চীন প্রস্তাব দিয়েছিল ১৫ শতাংশ ব্যয় সরকারি খাত থেকে বাড়তি মেটাতে হবে, এটা আমরা মেনে নিয়েছি।
 
সম্প্রতি সরকারের একমাত্র প্রকল্প তদারকি সংস্থা বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি) প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে এবং কিছু সুপারিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্টদের। এর মধ্যে অন্যতম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের জমি বাংলাদেশ রেলওয়েকে হস্তান্তরের কাযর্ক্রম দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। ইমব্যাংকমেন্ট নির্মাণের প্রতিটি স্তরে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী বিভিন্ন পরীক্ষা চলমান রাখতে হবে। প্রকল্পের চলমান কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইএমইডি।
 
রাজধানীর কমলাপুর থেকে গেণ্ডারিয়া-কেরাণীগঞ্জ-শ্রীনগর থেকে মাওয়ায় পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ডুয়েল গেজ রেলপথ নির্মাণ করা হবে।  জানুয়ারি ২০১৬ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়, শেষ হবে ২০২৪ সালের জুনে। আগের পরিকল্পনায় কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঠিকাদার চীনের চায়না রেলওয়ে গ্রুপ। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ২০১৫ সালের ১৭ ডিসেম্বর বাণিজ্যিক চুক্তি করে রেল মন্ত্রণালয়।
 
দুই ধাপে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। প্রথম ধাপে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ৮৫ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ করা হবে। ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথের ২৩ কিলোমিটার হবে উড়াল রেলপথ। ছোটবড় ১২৫টি সেতু নির্মাণ করা হবে। ৭০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে প্রকল্প বাস্তবায়নে। মূল অবকাঠামো নির্মাণ কাজ শুরু না হলেও বাংলাদেশের অর্থায়নে ভূমি অধিগ্রহণ কাজ শেষ হয়েছে। চলছে ভূমি উন্নয়ন ও ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কাজ।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৮৩৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২০
এমআইএস/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।