ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে এমপি মোতাহার!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০২০
জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে এমপি মোতাহার!

লালমনিরহাট: শহীদ মিনারের বেদীতে তৈরি মঞ্চে জুতা পায়ে উঠে বক্তব্য দিলেন লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন এমপি। শুধু তিনিই নন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহ সব অতিথি জুতা পায়ে উঠেছিলেন। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) পাটগ্রাম উপজেলার ধবলগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে এ ঘটনা ঘটে।

তিস্তার ভয়াল বন্যায় বন্যার্তদের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে আশ্রয়ণ ভবন নির্মাণের বরাদ্দ দেয় সরকার।

ভবনটি ধবলগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বন্যার সময় বন্যার্তদের ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হবে এবং বাকী সময় শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবন হিসেবে ব্যবহার করবে। এ ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপনের উদ্বোধন করতে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

আশ্রয়ন প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানএ জন্য ধবলগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের বেদীতে মঞ্চ তৈরি করা হয়। সেখানে প্রধান অতিথি লালমনিরহাট-১ (পাটগ্রাম-হাতীবান্ধা) আসনের সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেনসহ সব অতিথি জুতা পায়ে মঞ্চে উঠে বক্তব্য রাখেন। জুতা পায়ে শদীহ বেদীতে উঠা নিয়ে এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক বাংলানিউজকে বলেন, শহীদদের সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। সেই শ্রদ্ধার বেদীতে জুতা পায়ে উঠলে শহীদদের অসম্মান করা হয়। স্বাধীন দেশে কোনো রাজাকারও এমন ধৃষ্টতা দেখাতে পারেনি। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তথা মুক্তিযোদ্ধা হয়ে জুতা পায়ে শহীদ মিনারের বেদীতে উঠে এমপি মোতাহার হোসেন শুধু শহীদদের অসম্মান করেননি গোটা বাংলাদেশকে অপমানিত করেছেন। এটা স্বাধীন দেশের নাগরিকদের জন্য লজ্জার। তবে যারা শহীদ মিনারে মঞ্চ করে জুতা খুলে উঠার নির্দেশ দেন নি, সেই আয়োজকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

ধবলগুড়ি উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কবির হোসেনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মশিউর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি পুনম চন্দ্র রায় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থীরা।  

জুতা পায়ে শহীদ বেদীতে উঠার বিষয়ে পাটগ্রামের ইউএনও মশিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, নতুন এসেছি, তাই জানি না মঞ্চটি শহীদ মিনারে করা হয়েছে কী-না?। না জেনে উঠেছি। শহীদ বেদীতে জুতা পায়ে উঠা ঠিক হয়নি। আয়োজকরাও বিষয়টি জানাননি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০২০
এসএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad