ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

ভাড়া বাসায় চলছে শিশু একাডেমির কার্যক্রম!

সাজ্জাদ হোসেন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
ভাড়া বাসায় চলছে শিশু একাডেমির কার্যক্রম!

মুন্সিগঞ্জ: নিজস্ব ভবন নেই শিশু একাডেমি মুন্সিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের। গত ২৬ বছর ধরে ভাড়া করা একটি বাসায় চলছে এর কার্যক্রম। 

জানা যায়, ১৯৯৩ সালে শহরের কাচারির ভাড়া করা টিনশেড ঘরে মুন্সিগঞ্জে শিশু একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ২০০৩ সাল থেকে শহরের খালইস্ট এলাকায় কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

দোতলায় ভাড়া নেওয়া সাতটি কক্ষের চারটিতে প্রশাসনিক কার্যক্রম ও বাকি তিনটিতে প্রশিক্ষণের কার্যক্রম চালানো হয়। আর বেশি শিক্ষার্থীদের জায়গার অভাব পূরণের জন্য দুইটি শিফটে ক্লাস
নেওয়া হয়।  

মুন্সিগঞ্জ জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা দেওয়ান হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রতিনিয়ত নিজস্ব ভবন নির্মাণের জন্য চিঠি দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের আশ্বাসও দিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। শিশুদের জন্য যদি একটি ভবন তৈরি হয় তাহলে শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশে সহায়তা হবে। প্রতিভাবান শিশুদের নাচ, গান, চিত্রাংকন ইত্যাদি শিখতেও অনেক সুবিধা হবে। ভাড়া বাসায় এসব কার্যক্রম পরিচালনা করা অনেক কষ্টসাধ্য।  

২০০৩ সাল থেকে শহরের খালইস্ট এলাকার একটি দোতলার ভাড়া বাসা নিয়ে শিশু একাডেমির কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ২০০০ সালের পর থেকেই নিজস্ব একটি ভবন নির্মাণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে গণসদন ও পুলিশ লাইন্সের কাছে সরকারি জায়গায় ভবন নির্মাণের জন্য আশ্বাসও পেয়েছি, কিন্তু এর কোনো অগ্রগতি নেই।

শ্রীপল্লী এলাকার জেসমিন আক্তার বাংলানিউজকে জানান, এক ছেলে চিত্রাঙ্কন ও মেয়ে নৃত্যের ক্লাস করছে। ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ছোট একটি কক্ষে অনুশীলন করছে। নতুন ভবন নির্মিত হলে শিশুরা অনেক উপকৃত হবে।  

মালপাড়া এলাকার গৃহিণী চাঁদনী রানী সিনহা বাংলানিউজকে বলেন, শিশুরাই আগামী দিনে সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই তাদের জন্য সুন্দর পরিবেশে সংস্কৃতি চর্চার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া প্রয়োজন। শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন শিগগির নির্মাণ করা প্রয়োজন।  

পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয় স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র আদনান সামী বাংলানিউজকে জানায়, কক্ষে অনেক সময় গাদাগাদি করে ক্লাস করতে হয়। বেশি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এভাবে কোনো বিষয় বুঝতেও কষ্ট হয়।

মুন্সীগঞ্জ জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা দেওয়ান হাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় সারাদেশে বেশিরভাগ জেলায় শিশু একাডেমির নিজস্ব ভবন রয়েছে। সারাবছর মুন্সিগঞ্জ শিশু একাডেমির ব্যাপক আয়োজন থাকে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করার জন্য যে বাজেট দেওয়া হয় তা দিয়ে বিভিন্ন খাতে ভাড়ায় অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে হয়। জাতীয় শিশু প্রতিযোগিতায় হাজার হাজার শিশুদের সমাগম ঘটে। নিজেদের ভবন না থাকায় ধার করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের কক্ষ, শিল্পকলার অডিটোরিয়াম ভাড়া করে কাজ করতে হচ্ছে।  

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মতিউল ইসলাম হিরু বাংলানিউজকে জানান, সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শিশুদের বিকাশ সাধন করার জন্য নিজস্ব বাসভবন একান্ত প্রয়োজন। শিশু একাডেমির জন্য মুন্সিগঞ্জ শহরের মধ্যে একটি নিজস্ব ভবন নির্মাণ হলে শিশুদের জন্য কল্যাণকর হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা বাংলানিউজকে বলেন, জমি নির্বাচন করার জন্য মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসনকে ইতোমধ্যে বলা হয়েছে। জমি নির্বাচন করা হলে পরবর্তী ধাপের কাজগুলো করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।