ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

এটা ভুল বোঝাবুঝি, অর্থমন্ত্রীকে বলেছি: কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
এটা ভুল বোঝাবুঝি, অর্থমন্ত্রীকে বলেছি: কাদের

ঢাকা: সড়কের অবস্থা নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এক মন্তব্যে তোলপাড় হওয়ার পর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, এটা ছিল ভুল বোঝাবুঝি।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

আরও পড়ুন>> নুরের ওপর হামলায় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর


অর্থমন্ত্রী গত ১৯ ডিসেম্বর শেরেবাংলা নগরের ‘মহাসড়কের লাইফ টাইম: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনার সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য বলেন, ‘সড়কের অবস্থা ভালো না থাকায় জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারেন না।

এলাকার লোকজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গালি দেয়। সড়কের কারণে এলাকায় গিয়ে গাড়ির গ্লাস খুলে জনগণের সঙ্গে কথা বলতে পারি না, লজ্জা লাগে। ’

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী কাদের বলেন, ‘আমি ওনাকে (অর্থমন্ত্রী) বলেছি। এটা বিষয়টা হলো ভুল বোঝাবুঝি। ’

‘ওই রাস্তাটি চার লেন হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণের সময় তো ধুলাবালি হবে, এটা হলো বাস্তবতা। হয়তো উনি বাড়ি যেতে বার বার বিরক্ত হচ্ছেন। কিন্তু ঢাকা থেকে কুমিল্লার লাকসাম পর্যন্ত ভালোভাবে যেতে পারছেন। লাকসাম থেকে ধুলাবালি উড়ছে। ’

সামনের বছর মূল চ্যালেঞ্জ জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম কথা শৃঙ্খলা, দ্বিতীয় কথা শৃঙ্খলা এবং তৃতীয় কথা শৃঙ্খলা। ’

এ বছর শৃঙ্ললা ফিরে আনতে কতটুকু সফল হয়েছেন- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘না, এখনও পারিনি এটা। অনেক দূর এগিয়ে যেতে হবে। আমরা যেহেতু আইন পাস করেছি, এটার বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখনও আছে। বিআরটিএ-বিআরটিসিতে নতুন চেয়ারম্যান দিয়েছি। নতুন কিছু কার্যক্রম হাতে নিয়েছি, কিছু রিকমন্ডেশন আছে। টাস্কফোর্স এরমধ্যে একবার বসেছে এবং সেগুলোর বাস্তবায়ন বিআরটিএর কিছু আছে। এনফোর্সমেন্টের বিষয় পুলিশের হাতে। সব মিলিয়ে আমরা এখন বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু করব এবং শুরু হয়েছে। ’

সংসদের প্রথম সারিতে বিএনপি

বিএনপি ৩০ ডিসেম্বর গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবে- এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কেন তারা গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবে? তাহলে তারা কেন পার্লামেন্টের সদস্য হলো? নির্বাচনে উনি (ফখরুল ইসলাম) নির্বাচিত হয়ে পার্লামেন্টে যোগ দিলেন না কিন্তু ওই আসনে আরেকজনকে মনোনয়ন দিলেন সেখানেও মূল ব্যক্তি তিনি। তার মানে তিনি নির্বাচনটাকে স্বীকার করে নিয়েছেন এবং ব্যক্তিগত অসুবিধার জন্য পার্লামেন্টে নির্বোচিত হয়ে থাকলেন না। কিন্তু তার দলতো এলো এবং দলের লোকই ইলেকটেড হলো। সেই গণতান্ত্রিক নির্বাচনে অংশ নিয়ে পার্লামেন্টে তাদের পারফরমেন্স করছে এবং পার্লামেন্টের তাদের একজনকে প্রথম সারিতে বসানো হয়েছে। ’

তারা আসতে চাইলে ফিরিয়ে নেব

ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত সাহা বলেছেন, ‘২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় থাকাকালে সাম্প্রদায়িক সহিংতায় কিছু লোক ভারতে মাইগ্রেশন করেছে। ’

বিএনপি এর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছে, বিএনপিকে তারা সন্ত্রাসী দল বলার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।  

এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যেটা বলছেন বাংলাদেশের বাস্তবতায় এটি কি অসত্য? ২০০১ সাল থেকে যে মাইনরিটি পারসিকউশন এদেশে হয়েছে এটা কেবলমাত্র একাত্তরের বর্বরতার সাথে তুলনা হয়। কাজেই এখানে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার কোনো উপায় নাই। বিএনপি যতোই সত্যকে চাপা দিতে চাক, আপনারা জানেন তখন কীভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হয়েছে; বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। ওই অবস্থায় দেশ থেকে পালানোই ছিল স্বাভাবিক। অনেকেই জান-মালের নিরাপত্তার জন্য সেদিন পালিয়েছেন। মির্জা ফখরুল সাহেব যতোই সাফাই গান না কেন, যে সত্য দিবালোকের মত সত্য তা চাপা দিয়ে কারো কোনো লাভ নেই।

ড. গওহর রিজভী ভারতে বলেছেন, ‘যদি প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ থেকে কোনো সময় লোক গিয়েছে, তাদের ফেরত আনা হবে- এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান নিয়ে কাদের বলেন, ‘ফেরত আনার যদি প্রয়োজন হয়…, এখন শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিচ্ছিন্ন-বিক্ষিপ্তভাবে অঞ্চলভিত্তিক দু’চার জায়গায় কিছু ঘটনা ঘটেছে। সেটা তাদের দেশ থেকে পলায়নের মতো বা দেশ থেকে নিরাপদ আশ্রয় নেয়ার জন্য কোনো কারণ সৃষ্টি করেনি এবং এ ধরণের কেনো ঘটনাও ঘটেনি। ’

এ সরকারের আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে কিছু ঘটনা ঘটেছে যেমন- রংপুর, গোবিন্দগঞ্জ, রামু, নাসিরাবাদ; এসব ঘটনায় যারা জড়িত তাদেরকে বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। কাজেই তাদের দেশ থেকে চলে যাওয়ার কোনো কারণ সৃষ্টি করেনি বলে মনে করি। ’

বিএনপির আমলে সংখ্যালঘু নির্যাতনের সময় কি সংখ্যালঘু ভারতে চলে গেছে- প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘সেই অবস্থায় যাওয়াটা খুব স্বাভাবিক। আমরা ছিলাম বিরোধী দল, আমরা সহানুভূতিশীল ছিলাম অনেক জায়গায় নোঙরখানা করেছি, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া মোটামুটি সেইভ জোন একেবারেই আওয়ামী লীগ অধ্যুষিত এলাকা। সেখানে আমরা নোঙরখানা খুলেছি, ঢাকায়ও আমরা অনেককে আশ্রয় দিয়েছি। তখন ভয়ভীতির কারণে অনেকে চলে যেতে পারে। তারা দেশে আসতে চাইলে আমরা গ্রহণ করব। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৯
এমআইএইচ/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।