ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা, বিক্ষুব্ধ সিরাজগঞ্জবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা, বিক্ষুব্ধ সিরাজগঞ্জবাসী

সিরাজগঞ্জ: সদ্য ঘোষিত রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযুদ্ধকালীন উত্তরাঞ্চলের বেসরকারি সাব সেক্টর পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা ও সংগঠক প্রয়াত আব্দুল লতিফ মির্জার নাম আসার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে সিরাজগঞ্জ।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা, ছাত্র-জনতার উদ্যোগে মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এসব কর্মসূচিতে বক্তারা মুক্তিযুদ্ধে লতিফ মির্জার অবদানের কথা তুলে ধরে রাজাকারের তালিকায় তার নাম আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন।

সকাল ১০টায় সিরাজগঞ্জ শহরের চৌরাস্তা প্রেসক্লাব মোড়ে লতিফ মির্জা স্মৃতি পরিষদের আয়োজনে গাজী মির্জা ফারুক আহম্মেদের সভাপতিত্বে দেড় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন- জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত মুন্না এমপি, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উদ্দিন, জাসদ নেতা আবু বকর ভূঁইয়া, মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল ইসলাম, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসিম রেজা নূর দীপু, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক একরামুল হক ও লতিফ মির্জা স্মৃতি পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক কাইয়ুম আহম্মেদ পান্না।  

এ সময় বক্তারা বলেন, আব্দুল লতিফ মির্জা একটি ব্র্যান্ডের নাম। তিনি শুধু মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, ছিলেন একজন সংগঠকও। তার নেতৃত্বে ৬শ’ মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে গঠিত হয় পলাশডাঙ্গা যুবশিবির। বৃহত্তর পাবনা, বগুড়া ও রাজশাহী অঞ্চলে অর্ধশতাধিক সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয় লতিফ মির্জার নেতৃত্বে পলাশডাঙ্গা যুবশিবির। অথচ সেই লতিফ মির্জার নামই উঠেছে রাজাকারের তালিকায়! এটা জাতির জন্য লজ্জার। সিরাজগঞ্জবাসীর জন্য অপমানজনক। বিতর্কিত এই তালিকার কারণে প্রকৃত রাজাকাররাও নিজেদের অপরাধ অস্বীকার করার সুযোগ পাবে।  

বক্তারা তালিকা প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়কমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেন।

বাম থেকে মানববন্ধন ও জেলাবাসীর বিক্ষোভ।  ছবি: বাংলানিউজএদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে তাড়াশের মহিষলুটিতে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করেন মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে প্রায় আধ ঘণ্টাব্যাপী চলা প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন-পলাশডাঙ্গা যুবশিবিরের সহ-অধিনায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য গাজী ম ম আমজাদ হোসেন মিলনসহ মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতারা।  

উল্লাপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকালে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। পরে শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়। সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার খোরশেদ আলম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক গোলাম মোস্তাফা এতে নেতৃত্ব দেন। অবিলম্বে রাজাকার তালিকা থেকে লতিফ মির্জার নাম প্রত্যাহার না করা হলে মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন বক্তারা।  

এছাড়াও কামারখন্দে ছাত্র-যুব ইউনিয়নের উদ্যোগে আয়োজনে জামতৈল রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। মুক্তিযোদ্ধা আবু মো. জুলফিকার আজাদ এতে নেতৃত্ব দেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।