ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পাকিস্তান

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পাকিস্তান

ঢাকা: ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৪৯তম মহান বিজয় দিবস পালন করছে বাংলাদেশ। প্রতিবারের মতো এবারো দেশে-বিদেশে নানা আয়োজনে বিজয় দিবস পালিত হচ্ছে। 

স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স এখন ৪৮। বিভিন্ন দিক দিয়েই বাংলাদেশের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো।

অথচ এই বাংলাদেশের অগ্রগতির লাগাম টেনে ধরে রেখেছিল পশ্চিম পাকিস্তান। বিভিন্নভাবে তারা পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশের মানুষকে শোষণ করেছে। ৪৮ বছর পর সেই পাকিস্তান কেমন আছে? তারা কি আমাদের চেয়ে এগিয়েছে নাকি পিছিয়ে গেছে?

অর্থনীতিসহ প্রায় সব ধরনের সূচক অনুযায়ী পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে ওঠে ইমরান খানের ক্ষমতা গ্রহণের পর।  

গত বছর ডিসেম্বরে ইসলামাবাদে এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেন, ‘পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমানে বাংলাদেশ) যখন আলাদা হয়েছিল, আমাদের অনেকে বলেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তান আমাদের জন্য বড়মাপের বোঝা হিসেবে ছিল। নিজের কানেই আমি এসব শুনেছি। সেই পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) আজ সব কিছুতেই এগিয়ে গেছে। তাদের দূরদর্শী চিন্তার জন্যই এটা হয়েছে। ’

এছাড়া গত বছর পাকিস্তানের একটি টিভি টক শো’তে দেশটির নৃবিজ্ঞানী জাইঘাম খান নিজ দেশের সরকারের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের উন্নয়ন ঘটাতে চাইলে, বাংলাদেশের দিকে তাকান। সুইডেন নয় বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল অনুসরণ করুন’।  

পাকিস্তান কেন বাংলাদেশকে অনুসরণ করবে, সে বিষয়ে জাইঘাম খান তার বক্তব্যে নানা যুক্তি তুলে ধরেছিলেন। তার ওই বক্তব্যের পর পাকিস্তানে বিতর্কের ঝড় উঠেছিলো। তবে সেই বিতর্ক এখনো থেমে নেই।

আসুন দেখে নেয়া যাক পাকিস্তানের চেয়ে কতটুকু এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।  

জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচক, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, সামাজিক উন্নয়ন, নারীর ক্ষমতায়ন, ক্ষুধা প্রতিরোধ, সুশাসন, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ইত্যাদি খাতে পাকিস্তান পিছিয়ে পড়েছে।

চলতি বছর জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৫তম। এই সূচকে  বাংলাদেশ এক বছরে এক ধাপ এগিয়েছে। আর পাকিস্তানের অবস্থান ১৫২তম। পাকিস্তান এই সূচকে ১৭ ধাপ পিছিয়ে রয়েছে।  

নারীর ক্ষমতায়নেও বাংলদেশ এগিয়ে রয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব পাকিস্তানের চেয়ে বেশি। বাংলাদেশে প্রতিনিধিত্ব ২০ দশমিক ৩ ভাগ।  আর পাকিস্তানে প্রতিনিধিত্ব ২০ ভাগ।

বিশ্ব ক্ষুধা প্রতিরোধ সূচকে (জিএইচআই) পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে ক্ষুধা সূচকে ১১৭টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৮তম। আর পাকিস্তানের অবস্থান ১০২।  

বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু এখন ৭৪ দশমিক ৪ বছর। আর পাকিস্তানের মানুষের গড় আয়ু ৬৮ দশমিক ১ বছর। যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইকোনোমিকস অ্যান্ড বিজনেস রিসার্চের (সিইবিআর) ২০১৯ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী জিডিপির আকার অনুয়ায়ী বৃহত্তর অর্থনৈতিক দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ৪১তম। আর পাকিস্তানের অবস্থান ৪৪তম। সিইবিআর প্রতিবেদন অনুযায়ী পাকিস্তান এক্ষেত্রে তিন ধাপ পিছিয়ে রয়েছে।

স্বাধীনতার ৪৮ বছরের মাথায় পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ ঠিক কী কী কারণে এগিয়ে রয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ওয়ালিউর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘নেতৃত্বের জন্যই পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্যই আমরা এগিয়ে চলেছি। অন্যদিকে পাকিস্তানে দীর্ঘদিন গণতান্ত্রিক সরকার ছিল না। সেখানে সামরিক বাহিনীর প্রভাব অনেক বেশি। সে কারণে বিদেশি বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। ’

তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বারবার বাধাগ্রস্ত হওয়া, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়া, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না হওয়া ইত্যাদি কারণে পাকিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে পড়ছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
টিআর/এজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।