ঢাকা, শুক্রবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

১২ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় নরসিংদী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
১২ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় নরসিংদী

নরসিংদী: ১২ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদারমুক্ত হয় নরসিংদী। দীর্ঘ নয় মাসের একটানা শ্বাসরুদ্ধকর মুক্তিযুদ্ধে হাজারো প্রাণের আত্মত্যাগের বিনিময়ে শত্রুমুক্ত হয় জেলাবাসী। 

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, ১৯৭১ সালে নরসিংদীতে গণহত্যায় মেতে উঠেছিল বর্বর পাকিস্থানি হনাদার বাহিনী। হানাদারদের প্রতিরোধ করতে মুক্তিযোদ্ধারা ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট কোম্পানি ইপিআর, আনসার ও পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে মিলিত হয়।

পরে শুরু হয় প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও চোরাগুপ্তা হামলা। স্থলপথে মুক্তিবাহিনীর প্রবল প্রতিরোধে টিকতে না পেরে পাকিস্তানি বাহিনীর বোমারু বিমান নরসিংদী শহরে বোমা নিক্ষেপ শুরু করে। তখন গোটা শহর পরিণত হয় মৃত্যু পুরিতে। এর পরেই নরসিংদী বিভিন্ন পয়েন্টে ঘাটি স্থাপন করে এবং দালাল আর রাজাকারদের যোগসাজশে প্রতিদিন ধর্ষণ, লুটসহ গণহত্যা শুরু করে হানাদার বাহিনী। নরসিংদীর এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে হানাদারদের নিষ্ঠুর ছোবল পড়েনি।  

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাঁচদোনা ব্রিজ, শিলমান্দী মাছিমপুর বিল, খাটেহারা ব্রিজ, মনোহরদীর ব্র‏হ্মপুত্র নদের তীর, শিবপুরে ঘাসিরদিয়া, পুটিয়া, বেলাব আড়িয়াল খাঁ নদীর পাশে, রায়পুরা মেথিকান্দা রেল স্টেশনের গণকবর রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ গণকবরই রয়েছে অবহেলায়। জেলাটিতে যারা দেশের জন্য জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন তাদের কবরের শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকু রক্ষায় এ পর্যন্ত উদ্যোগ নেয়নি কোনো সরকার।

দীর্ঘ নয় মাস একটানা জেলার বিভিন্ন স্থানে শতাধিক খণ্ড যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের নির্মমতার শিকার হয়ে শহীদ হন ১১৬ জন বীর সন্তান। এসব স্থানে স্বাধীনতার ইতিহাস ধরে রাখতে অন্তত প্রতিটি উপজেলায় স্মৃতিস্তম্ভ গড়ে তোলার পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যানে সরকারকে নানা উদ্যোগ নেওয়ার দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের।  

নরসিংদী মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মোতালিব পাঠান বাংলানিউজকে বলেন, জীবন বাজি রেখে যে যোদ্ধারা মুক্তিযুদ্ধ করে শহীদ হয়েছেন, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর তাদের গণকবরগুলো রয়েছে অযত্ন আর অবহেলায়। কোথাও কোথাও রক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কেবল থমকে আছে সে পর্যন্তই, দৃশ্যমান কোনো উন্নয়ন হয়নি এসব স্মৃতি রক্ষায়। তাইতো বীর সেনাদের মনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।  

নরসিংদী জেলা প্রশাসক (ডিসি) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন বাংলানিউজকে বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের সক সমস্যার সমাধান কল্পে কাজ করছে সরকার। অচিরেই গণকবরগুলো রক্ষাসহ সব দাবি বাস্তবায়ন করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৯
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।